বন্দর উপজেলা নির্বাচন জমে উঠছে ২ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের আবেদন
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর বিরুদ্ধে করখেলাপী ও মামলার তথ্য গোপন করার অভিযোগ এনে তাদের প্রার্থীতা বাতিল চেয়ে নির্বাচনে কমিশনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অপর এক প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। গতকাল মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযোগ দাখিলকারী প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। তিনি আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের ছেলে। এর আগে গত সোমবার নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে এ অভিযোগ দায়ের করেন। বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে করখেলাপীর অভিযোগ এবং অপর প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য গোপন রাখার অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনে তাদের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেছেন অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহমুদুল হাসান। উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুলকে করখেলাপী উল্লেখ করে তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকে সকল প্রকার ব্যাংক ঋণ, আয়কর, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য সেবা খাতে দায়মুক্ত থাকতে হবে। মোঃ আতাউর রহমান (মুকুল) আসন্ন বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তিনি সিলভার ক্রিসেন্ট হাসপাতাল লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ২০১৩-১৪ করবর্ষ হইতে ২০১৯-২০ করবর্ষ পর্যন্ত ৪ লাখ ৭২ হাজার ৭২৭ টাকা বকেয়া এবং ২০২০-২১ করবর্ষ হইতে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন নাই বিধায় উক্ত প্রতিষ্ঠান কর খেলাপী হিসাবে বিবেচিত হওয়ার যোগ্য। যেহেতু মোঃ আতাউর রহমান (মুকুল) উক্ত প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং ৫০ শতাংশ শেয়ারের মালিক, সেহেতু তিনিও একজন করখেলাপী হিসারে বিবেচিত। এমতাবস্থায়, উল্লেখিত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আতাউর রহমান মুকুলকে একজন করখেলাপী হিসাবে চিহ্নিত করে তার মনোনয়নপত্র বাতিলপূর্বক আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। অপর প্রার্থী একেএম আবু সুফিয়ান বিরুদ্ধে মামলার তথ্য গোপনের অভিযোগ হয়। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকে তার নির্বাচনী হলফনামায় সকল ব্যক্তিগত তথ্য নির্ভুল ও সঠিকভাবে উপস্থাপন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ কে এম আবু সুফিয়ান আসন্ন বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু এ কে এম আবু সুফিয়ান নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার অস্ত্র আইনের মামলার তথ্য মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করেন নাই। কে এম আবু সুফিয়ানকে একজন নির্বাচনী হলফনামায় তথ্যগোপনকারী হিসাবে চিহ্নিত করে তার মনোনয়নপত্র বাতিলপূর্বক আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। এ ব্যাপারে অভিযোগ দাখিলকারী প্রার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, আমি অভিযোগ দিয়েছি এবং সঠিক তথ্য উপস্থাপন করেছি। যেহেতু একজন করখেলাপী ও আরেকজন তথ্য গোপনকারী আমি তাদের প্রার্থিতা বাতিল চাই। অভিযোগ সম্পকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুল বলেন, আমি এটা শুনেছি ও জেনেছি। উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় আমি জড়িত নই। আর যেহেতু মালিকানায় আমি নেই আমার সাথে এ অভিযোগের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আর তাই অভিযোগটি মিথ্যা। অপর প্রার্থী একেএম আবু সুফিয়ান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। যেহেতু জানা নেই তাই এ ব্যাপারে এখনি আমি কোন মন্তব্য করতে পারছিনা। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থীসহ ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত সোমবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম আবু সুফিয়ান, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, জাতীয় পার্টির নেতা ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের পদত্যগকারী চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন এবং তার ছেলে মাহমুদুল হাসান। জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানিয়েছেন, আজ বুধবার বেলা ১১টায় জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাচাই অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় প্রত্যেক প্রার্থী ও তার সমর্থনকারী এবং প্রস্তাবকারীকে উপস্থিত থাকতে হবে। ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে রিটার্নিং অফিসারের সিন্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল এবং ২১ এপ্রিল আপিল নিষ্পত্তি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল। আগামী ৮ মে ভোটগ্রহণ। এ নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৪ জন।