সোনারগাঁয়ে কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সোনারগাঁওয়ে জামপুরে আমির হোসেন ও তার ভাতিজা দিপুর নানা অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তিনি গড়ে তুলেছেন ত্রাশের রাজত্ব। তার ছত্রছায়ায় তৈরি হয়েছে কিশোর গ্যাং। চুরি ছিনতাই, চাদাবাজী, মাদক ব্যবসা, অপহরণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত বিএনপি নেতা আমির হোসেন। অভিযুক্ত আমির হোসেন জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক। স্থানায় প্রশাসন ও এমপির হস্তক্ষেপ কামনা করছেন অতিষ্ট গ্রামবাসী। এ আমির হোসেন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রæত আইনী ব্যবস্থা নেয়া হোক। অতিষ্ট গ্রামবাসী বলেন, আমরা গ্রামবাসী আমির ও তার বাহিনীর এ অত্যাচার নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে চাই। বিএনপি নেতা আমির হোসেন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আমির হোসেন ও তার বাহিনী এলাকায় নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তার সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে আমরা এলাকায় ঠিকমত চলা ফেরাও করতে পারি না। হামলা, চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, চাদাবাজীসহ নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই সংঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে হামলা চালায়। তার বাহিনীর অত্যাচারে জামপুরের মালিপাড়া, কাঠাবো, বশিরগাঁও, মহজমপুর, কাঠারাব, কাজিপাড়া, বস্তল, শেখেরহাট, তালতলাসহ বিভিন্ন গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। প্রশাসন ও স্থানীয় এমপি মহোদয়ের কাছে আমাদের অনুরোধ তদন্ত সাপেক্ষে এ আমির হোসেন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রæত আইনী ব্যবস্থা নেয়া হোক। জানা যায়, আমির হোসেন তৈরি করেছেন এক কিশোর গ্যাং বাহিনী। তার কিশোর গ্যাংয়ে রয়েছেন তার আপন ভাতিজা মালিপাড়া গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে মো. দিপু, মো. আরাফাত, নিজাম উদ্দিনের ছেলে ওমর ফারুক, টানপাড়া গ্রামের জাফর আলীর ছেলে মো. নুরে আলম, শুক্কর আলীর ছেলে মো. রানাসহ ১০/১৫ জনের বাহিনী। গত ৯ এপ্রিল দুপুরে জামপুরের মরিচটেক এলাকায় বি আর স্পিনিং মিলের সামনে মিলের চাকুরী থেকে বের হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন চাকুরীজীবি আমজাদ হোসেন। এসময় আমির হোসেনের কিশোর গ্যাং বাহিনী আমজাদ হোসেনকে মারধর করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে আমজাদ হোসেনের স্ত্রীর রিনা বেগমের কাছ থেকে মোবাইল ফোন করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। এ ঘটনায় অপহৃতের ভাই মো. মাসুদ বাদী হয়ে সোনারগাঁও থানায় অপহরণ মামলা হয়। এছাড়া সম্পতি আমির হোসেনের কিশোরগ্যাং বাহিনী তালতলা আওয়ামী লীগ অফিসের ত¦ত্বাবধায় খেদমত আলীর নাতী নিলয়ের কাছ থেকে মোবাইল ও টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। বশিরগাঁও গ্রামের শ্যামলকে পিটিয়ে জখম করে, তালতলা বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মো. মহসিনকে কুপিয়ে জখম করে টাকা ছিনিয়ে নেয়। মহজমপুর উত্তর কাজিপাড়া গ্রামের এক অটোচালকের ছেলের কান কেটে নেয় আমির হোসেন বাহিনী। জামপুরের মালিপাড়া, মহজমপুর স্কুল মাঠের আশে পাশে প্রতিদিনই কিশোর গ্যাংয়ে মহড়া চলে। ভুক্তভোগী জানান, গ্রামের সাধারণ মানুষজন বিএনপি নেতা আমির হোসেন ও তার ভাতিজা দিপুর নেতৃত্বে তারা নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমাদের পরিবারকে নানা ভাবে হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করে অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে এসে হামলার চেষ্টা করে। তাদের দখলবাজ, কিশোরগ্যাং, ছিনতাই, অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পুরো এলাকার সাধারণ মানুষ। গ্রামের প্রায় সবাই তাদের রোষানলের শিকার হয়ে চরম হয়রানী আর নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছে। কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না আমির হোসেনের কিশোর গ্যাং বাহিনী। এদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনসাধারণ। আশ্রয়-প্রশ্রয়ে লালিত-পালিত বেপরোয়া কিশোর গ্যাংদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশের চরম অনিহার বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়ায় অভিযোগের তীর এখন সরকার দলীয় শীর্ষ নেতাদের দিকেই। বেপরোয়া কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচার ভয়ানক রূপ নেয়ায় সর্বমহল থেকে দাবী উঠেছে, সময় হয়েছে এদের লাগাম টেনে ধরা এবং মূল উৎপাটন করার। উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির প্রতিটি সভায় এসব বিষয়ে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা বিষয় উঠে আসে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম কর্মীদের বক্তব্যে। ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে আমির হোসেন ও তা বাহিনী। ফলে দিন দিন তার দুর্বৃত্তপনা বেড়ে যাওয়ায় এলাকাবাসী অসহনীয় নরক যন্ত্রণায় নিপতিত হয়ে করুণ পরিস্থিতির মধ্যে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছে। অপরাধ করেও বুক ফুলিয়ে নতুন নতুন ষড়যন্ত্রের জাল বিছানোসহ প্রভাব বিস্তার করে প্রতারণায় আচ্ছন্ন করছে সমাজকে। অভিযুক্ত আমির হোসেন তার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত নই। আমার ভাই ভাতিজারা একটু বখাটেপনা। তারা আমার নাম ব্যবহার করতে পারে