মূর্যাল নিয়ে নেতাদের চাঁপাবাজি ব্যর্থ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সরকার পতনে ব্যর্থ হয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে হতাশা জেঁকে বসেছে। জেলা ও মহানগরের বিএনপি নেতারা মাঠে ময়দানে চাপাবাজি করলেও তাদের কাজেকর্মে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। আন্দোলন জমাতে না পারায় মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দিন দিন নিষ্ক্রিয় হয়ে স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি থাকছেন। চলতি মাসের শুরুতে রাতের আঁধারে অচেনা দুর্বৃত্তের হাতুড়ির পিটুনিতে চাষাঢ়ার টাউন হলে স্থাপিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ম্যুরাল ভূপাতিত হয়। ভোর হতে না হতেই মারাত্মক এ দুঃসংবাদটি এককান দু’কান হয়ে দুই খানের কানেও পৌঁছে যায়। মোবাইলে খবর পেয়ে সকালে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু অকুস্থলে গিয়ে হম্বিতম্বি শুরু করেন। গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন। জিয়ার ভূপাতিত ম্যুরালের সামনে দাঁড়িয়ে ফটোশেসন করেন। এরপর এ কাজের জন্য ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের প্রভাবশালী সাংসদ শামীম ওসমানকে দায়ী করে টিপু হেড়ে গলায়‘ দেখিয়ে দেবো, বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবো’ বলে হুংকার দিয়ে আল্টিমেটাম ছুঁড়ে দেন। ব্যাস, ওই পর্যন্তই! আল্টিমেটাম শেষ হয়ে যাওয়ার পরও আন্দোলনের মাঠে এই দুই খানের চেহারা কেউ দেখেছেন বলে মনে হয় না। তবে এ বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির নেতাদের ভূমিকা রহস্যময় বলেই মনে করা হয়। আন্দালন দূরে থাক, প্রকাশ্যে কিছু বলতেও যেনো নেতারা সাহস পাচ্ছেন না। জিয়ার ম্যুরাল ভাঙ্গা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শামীম ওসমান জোরালো বক্তব্য রাখার পর সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যেতে শুরু করেছে। বিএনপিও এ নিয়ে আর কোন কথা বলছে না। জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সাংসদ শামীম ওসমান জিয়া হলের জায়গায় ‘৬ দফা মঞ্চ’ নির্মাণের কাজ দ্রæত এগিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। আসছে ১৫ আগস্ট এ মঞ্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের কথা রয়েছে। সবদিক দিয়েই বিএনপি পিছিয়ে পড়ছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ দলটি এখন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রাণান্ত চেষ্টায় লিপ্ত। জাতীয় এবং স্থানীয় সব নির্বাচন বয়কট করাটা দলের বিপদ ডেকে আনছে বলে মনে করছেন বোদ্ধামহল। অদূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বিএনপি সরকারের কৌশলের কাছে বার বার হেরে গিয়ে হতাশায় কুঁকড়ে যাচ্ছে। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন এবং প্রতিহতের ডাক দিয়েও বিএনপির নেতাকর্মীরা মাঠে না থাকায় সরকার নির্বিঘেœ নির্বাচন করে ফেলেছেন। এখন দলীয় প্রতীকহীন উপজেলা নির্বাচন করতে যাচ্ছে সরকার। বিএনপি এ নির্বাচনও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার পক্ষে ছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি। মহানগর বিএনপির মধ্যমসারির এক নেতা বলেন, ‘বিএনপি যদি নির্বাচনে যেতো, তবে জয়-পরাজয় যাই হোক না কেনো, দলের নেতাকর্মীরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসতো। এখনতো তারা ঘরবন্দি। কোন কর্মসূচি না থাকায় দলের তৃণমূল পর্যায়েও হতাশা বিরাজ করছে। অনেকে দল ছেড়ে দিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার রাজনীতিই ছেড়ে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। এটা দলের জন্য কোন সুখকর কিংবা শুভ লক্ষণ নয়।’ বিএনপি অংশ না নিলে কি উপজেলা নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাবে! মোটেও না। এ জিনিসটা কেন্দ্রীয় মোটা মাথাওয়ালা নেতারা যে একেবারেই বুঝেন না, তা কিন্তু নয়। এ মুহূর্তে বিএনপির সেই নেতার কথাটাই নতুন করে বলতে হয়, “কুত্তায় লেজ নাড়ায় নাকি লেজ কুত্তা নাড়ায়”!