আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | সন্ধ্যা ৬:৪৯

তীব্র গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়

ডান্ডিবার্তা | ২১ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
তীব্র গরমে সারা দেশের মানুষ হাঁসফাঁস করছে। হিট স্ট্রোকে কয়েকটি জেলায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। তীব্র এই গরমে সুস্থ থাকতে কী করণীয় সে বিষয়ে দুজন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। চলমান তাপপ্রবাহের তীব্রতা থেকে বাঁচতে প্রচুর পানি পানের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে যে তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে তা মানব স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই আবহাওয়ায় সুস্থ থাকতে কিছু বিষয় পালন করতে হবে। রোদে বাইরে না যাওয়া, গেলেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বের হতে হবে। প্রচুর পানি পান করতে হবে কারণ ঘামের ফলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। ঘাটতি পূরণে ডাবের পানি, শরবত বা স্যালাইন পান করতে হবে। বেশি সময় রোদে থাকলে হিট স্ট্রোক হতে পারে, তাই কর্মজীবীদের দুপুরের পরিবর্তে সকালে ও বিকেলে বাইরে যাওয়ার অনুরোধ করেন ডা. বে-নজির আহমেদ। এ ছাড়া গরমে শিশু ও বয়স্করা বেশি ঝুঁকিতে থাকে, তাই তাঁদের বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, তীব্র গরমে মানুষজন অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ মারা যাচ্ছে। এই অবস্থায় পরামর্শ হচ্ছে—শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী নারী এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে যারা ভুগছেন তারা যেন নেহাত বাসা থেকে না বের না হয়। অন্যদিকে শ্রমজীবী মানুষেরা বের হওয়ার সময় বোতলে যেন বিশুদ্ধ পানি নিয়ে যায়। কেননা তীব্র গরমে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এ সময় পানি না খেলে, পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এ কারণে পানি এবং ওরস্যালাইন প্রয়োজন মতো পান করতে হবে। গরমে আঁটসাঁট জামা কাপড় না পরে সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। ঘর থেকে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে। যতটা সম্ভব রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। গরমের কারণে অনেক জটিলতা হতে পারে জানিয়ে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, গরমে মানুষ অবসন্ন বোধ করে। পানিশূন্যতার কারণে প্রস্রাবের রং হলুদ হয়ে যায়, মাথা ঘোরে, বমি বমি লাগে, চোখে ঝাপসা দেখে। অনেকে অসংলগ্ন কথা বলে। রাস্তার পাশের অস্বাস্থ্যকর পানীয়র বিষয়ে সতর্কতা জানিয়ে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, ‘তীব্র গরমে অনেকে রাস্তার পাশে শরবত কিনে খায়। এটা খেতে আমরা একেবারেই মানা করি কারণ শরবতে ব্যবহৃত পানি নিরাপদ বা সুপেয় পানি না। এতে নানা ধরনের জীবাণু থাকে। যে বরফ ব্যবহার করা হয়, তা মানুষের খাওয়ার জন্য বানানো হয়নি। সেটাও পানিবাহিত রোগের কারণ হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পানীয়তে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি, হেপাটাইটিস, টাইফয়েড, ফুড পয়জনিং হতে পারে। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা নি¤œরূপ—
১. অত্যধিক তাপ মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। বিশেষ করে শিশু, গর্ভবতী নারী, বয়োবৃদ্ধ এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি রোগাক্রান্ত যেমন—ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা বেশি।
২. প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম। তারা তাপ থকে রক্ষা পেতে প্রাপ্তবয়স্কদের ওপর নির্ভরশীল। এ জন্য শিশুদের ব্যাপারে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করুন।
৩. পরিবারের পূর্ণবয়স্ক সদস্য, শিশু, গর্ভবতী নারী, প্রৌঢ়/বৃদ্ধ এবং অন্যান্য রোগাক্রান্ত রোগীরা অত্যধিক তৃষ্ণা ও গরম বোধ করছে কিনা বা অতিরিক্ত ঘাম, বমি হওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া বা মুখ আঠালো অনুভূত হওয়াসহ মাথাব্যথার মতো লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে যেমন—ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে, তাপাক্রান্ত হওয়ার আগে কী করতে হবে সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৫. প্রচÐ গরমের সময় শিশুদের প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না নেওয়া, তীব্র গরমে কাজ করার সময় নিয়মিত বিরতি নেওয়া, গর্ভবতী মা, শিশু ও বয়স্কদের বিশেষ যতœ নিতে হবে।
৬. অতিরিক্ত তাপ পানিশূন্যতা, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার মতো মৃদু স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। পাশাপাশি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন—হৃদ্‌রোগ, কিডনির সমস্যা, পেশি ও স্নায়ুর বৈকল্য, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৭. অতিরিক্ত তাপের গুরুতর উদ্যোগগুলোর জন্য জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। এর লক্ষণগুলো হচ্ছে—কনফিউশন বা বিভ্রান্ত, শরীর অসাড় হয়ে পড়া, অজ্ঞান হওয়া, শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া, হৃৎস্পন্দন বা শ্বাসক্রিয়ার হার বেড়ে যাওয়া ও খিঁচুনি হওয়া।
৮. তীব্র গরম থকে দূরে থাকুন, মাঝে মাঝে ছায়ায় বিশ্রাম নিন।
৯. প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করুন। হেপাটাইটিস এ, ই, ডায়রিয়াসহ প্রাণঘাতী পানিবাহী রোগ থকে বাঁচতে রাস্তায় তৈরি পানীয় ও খাবার এড়িয়ে চলুন। প্রয়োজনে একাধিকবার গোসল করুন।
১০. গরম আবহাওয়ায় ঢিলেঢালা পাতলা ও হালকা রঙের পোশাক পরুন, সম্ভব হলে গাঢ় রঙিন পোশাক এড়িয়ে চলুন।
১১. গরম আবহাওয়ায় যদি ঘাম বন্ধ হয়ে যায়, বমি বমি ভাব দেখা দেয়, তীব্র মাথাব্যথা হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, প্রস্রাব কমে যায়, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হয়, খিঁচুনি এবং অজ্ঞান হওয়ার মতো কোনো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা