শহরবাসীকে স্বস্তি দিতে রোধ বৃষ্টিতে যাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
তীব্র গরমে ছাতা মাথায় সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন এক ট্রাফিক পুলিশ। দুপুর সাড়ে ১১টা। সূর্য রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। তাপমাত্রা তখন ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। কিন্তু গরম অনুভূত হচ্ছিল এর চেয়ে বেশি। সে সময় কাচপুর ব্রিজ থেকে ভুলতার দিকে যেতে ব্রিজের ঢালেই দায়িত্ব পালন করছিলেন পুলিশের দুজন সার্জেন্ট ও তিনজন সদস্য। গাড়ি থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাঁচাই করছিলেন তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, প্রচÐ গরমে রাস্তায় দায়িত্ব পালন সত্যিই বেশ কষ্টকর। কিন্তু কিছু তো করার নেই। রাস্তায় পাঁচ মিনিট না থাকলে যানজট লেগে যায়। ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। দুপুরে যাঁরা দায়িত্ব পালন করছিলেন, তাঁদের একজন বলেন, প্রচÐ গরম কিংবা বৃষ্টিতে রাস্তায় দায়িত্ব পালনের সময় বিশ্রামের সুযোগ নেই। তবে এবারের গরম অনেক বেশি। তাই মাঝেমধ্যে অস্বস্তি লাগে। সকাল থেকে শিমরাইল মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন এক সার্জেন্ট। তাঁর সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন বিকেল চারটা। তিনি বলেন, সকালে অফিসে যাওয়া ও বিকেলে অফিস ছুটি হওয়ার সময় প্রচÐ চাপ থাকে। তখন যত গরমই হোক না কেন, বিশ্রামের সুযোগ পাওয়া যায় না। তবে অন্য সময় পাঁচজনের কোনো দল একটি এলাকায় দায়িত্ব পালন করলে নিজেদের মধ্যে কথা বলে এক-দুজন বিশ্রাম করেন। তাঁরা এলে আবার অন্যরা বিশ্রাম করেন। এভাবেই সমন্বয় করে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশের যেসব সদস্যকে রাস্তায় দায়িত্ব পালন করতে হয়, তাঁদের রোদ থেকে সুরক্ষা পেতে ছাতা ও টুপি ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গরমে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কেউ যাতে অসুস্থ হয়ে না পড়েন, সে জন্য পানি ও খাওয়ার স্যালাইনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তবে গরম বিবেচনায় কর্মঘণ্টা কমেনি, আগের মতোই কাজ করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনার বলেন, কিছুটা সমস্যা হলেও দায়িত্ব থেকে পিছপা হওয়ার সুযোগ নেই। প্রচÐ গরম বিবেচনায় রেখে খাওয়ার পানি, স্যালাইন ও ছাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রচÐ তাপপ্রবাহে হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে এবং পুলিশ সদস্যদের সুস্থ থাকতে পুলিশ সদর দপ্তর কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাইরে দায়িত্ব পালনের সময় ছাতা, টুপি, সানগøাস ব্যবহার নিশ্চিত করা, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশুদ্ধ ও স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি ধীরে ধীরে পান করা, ঠান্ডা পানি (বরফসহ পানি) পান পরিহার করা, পুলিশ মেস, ক্যানটিনে বিশুদ্ধ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন করা, বাইরে থেকে ঘরে ফিরে আধা ঘণ্টা পর হাতমুখ ধোয়া বা গোসল করা। ট্রাফিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের সারা দিনই রোদে বাইরে কাজ করতে হয়। দুই বছর ধরে প্রচÐ গরম পড়ছে। অভ্যস্ত হতে একটু সময় লাগবে। মাঠপর্যায়ে যাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ আশরাফ ইমাম। তিনি বলেন, ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগ অফিশিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রæপে নিয়মিত সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তাপপ্রবাহ থেকে সুরক্ষায় প্রস্তুতি থাকার কারণে ট্রাফিক সদস্যদের হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।