উপজেলায় সুষ্ঠু ভোটে এমপিরা বাধা!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলা ছাড়া সবকটি উপজেলায় নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে। প্রার্থীরা তীব্র গরমেও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। সকলেই জয়ের আশায় মাঠে রয়েছে। এদিকে আওয়ামীলীগ দলীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক এমপি মন্ত্রীদের পরিবার বা আত্বিয় কেহ এই উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। শুধু তাই নয় কোন এমপি কোন প্রার্থীকে সমর্থনও করতে পারবে না। কিন্তু দলীয় বা আওয়ামীলীগ সরকারের সিদ্ধান্তকে বৃঙ্গাুলি দেখিয়ে নারায়ণগঞ্জে এমপিরা এ নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের সমর্থন দেয়া ছাড়াও নিজ পরিবারের লোকদের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন। আর নির্বাচনের সময় তারা প্রভাব খাটাবে এটাই স্বাভাবিক। এতে করে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এমপিরা। আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেছেন নির্বাচন কমিশন। অধিকাংশ উপজেলায়ই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলার ভোটেও আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ নেই মাঠে। তবে বন্দর উপজেলায় জাতীয় পার্টির নেতা মাকসুদ হোসেন নির্বাচন করছেন। তবে এখানে তৃণমূল আওয়ামী লীগে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন স্থানীয় এমপির আশীর্বাদপুষ্ট প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিকে হস্তক্ষেপ না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসনও কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন্দর উপজেলার কয়েকজন ভোটার বলেন, স্থানীয় এমপির নির্দেশে উপজেলা নিবার্চন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন স্থানে চেয়ারম্যান প্রার্থীর নেতাকর্মী ও সর্মথকদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন এবং সংসদ সদস্যের কাছের মানুষরাও বিভিন্ন স্থানে মাইকে বক্তব্য দিয়ে হুমকি দিচ্ছেন। এতে করে তার নেতাকর্মী ও সর্মথকরা ভয় পেয়ে প্রচারণার কাজ চালাতে পারছে না। পাশাপাশি আমরাও আতংকে আছি অবাধ, নিরপেক্ষ ভোট হবে তো? ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবো তো? জাবেদ মিয়া নামে এক ব্যক্তি জানান, মাকসুদ হোসেন উপজেলা পরিষদ নিবার্চন করার ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য নিবার্চনে প্রভাব বিস্তার করে উনার পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন সুকৌশলে। তিনি ও তার লোকজন মাকসুদ হোসেন ও আতাউর রহমান মুকুলের কর্মী সর্মথকদের নানা ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রচার কাজে বাধা সৃষ্টি করছেন। তাই নিবার্চনী আচরণবিধি অনুযায়ী সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করার দাবি জানান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জাতীয়পার্টির নেতা জানান, এমপি আমাদেরকে তার অফিস কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জাতীয়পার্টির নেতা চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেনের পক্ষে কাজ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এতে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু হবে কিনা এ বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করছি আমরা। একজন জাতীয়পার্টির ত্যাগী নেতা বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য জাতীয়পার্টির প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রশিদের পক্ষে কাজ করছেন তিনি। এমপি জাতীয়পার্টির সংসদ সদস্য হয়েও জাতীয়পার্টির প্রার্থীর সাথে যে আচরণ করছেন তা আমরা কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছি না। ভবিষৎতে বন্দর উপজেলা জাতীয়পার্টি নেতৃত্বশূণ্য ও দূর্বল হয়ে পড়বে বলে মনে করেন তিনি। আকলিমা আক্তার নামে এক নারী জানান, বন্দরে যিনি যোগ্য প্রার্থী আমরা তাকেই ভোট দিবো। তবে শুনেছি একটি বিশেষ গ্রæপ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে মাঠে কাজ করছে। তিনি বলেন, আমরা যদি কেন্দ্রে যেতে পারি সুস্থ্য হবে তাহলে অবশ্যই আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকেই আমাদের ভোটটি দিয়ে তাকেই বিজয়ী করবো। এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলা নির্বাচন কমিশনার রিয়াজ আহমদ জানান, নির্বাচনী আচরণ বিধি যারা লঙঘন করছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করব। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের সার্থে আমাদের যা যা করনীয় আমরা সবই করব। সংসদ সদস্য নির্বাচনে একজন প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব বিস্তার করছেন কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই নির্বাচন যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে আমরা শক্ত অবস্থানে রয়েছি।