সোনারগাঁয়ে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের ভাবনা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে পথে ঘাটে বা চায়ের আড্ডায় ভোটারদের মধ্যে আলোচনা চলছে। কে কতটুকু উন্নয়ন করবে উপজেলার। কে কতটুকু ক্লিন ইমেজের লোক। ইতিমধ্যে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দিয়েছে জেলা নির্বাচন কমিশন ও জেলা রিটার্নিং অফিসার। গত বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহফুজুর কালাম ঘোড়া প্রতীক, বাবুল ওমর বাবু আনারস প্রতীক ও আলী হায়দার পেয়েছেন দোয়াত কলম প্রতীক। যেখানে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাসুম চৌধুরী তালা প্রতীক, আজিজুল ইসলাম মুকুল মাইক প্রতীক, মো: আবুল ফয়েজ শিপন চশমা প্রতিক ও জাহাঙ্গীর হোসেন পেয়েছেন টিউবওয়েল প্রতীক। এ ছাড়াও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাহমুদা আক্তার ফেন্সী হাঁস প্রতিক ও ফরিদা পারভীন শ্যামলী চৌধুরী পেয়েছেন ফুটবল প্রতিক। অন্যদিকে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলাম নান্নু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী কোহিনুর ইসলাম রুমা, অ্যাডভোকেট নুরজাহান ও হেলেনা আক্তার এবং পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থি মাহবুব পারভেজ, জহিরুল ইসলাম খোকন হাইকোর্টে রিটের মাধ্যমে প্রার্থীতা পাওয়ায় তাদের প্রতিক বরাদ্দ হবে কাল রবিবার। এদিকে প্রতীক পাওয়ার থেকে ভোটারদের মধ্যে আলোচনার বিষয় হলো সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কোন প্রার্থী কে কত জনপ্রিয়। চায়ের দোকানে এমন নানা আলোচনা সমালোচনার কথা শোনা যায়। তাদের দাবি আসলে সোনারগাঁ উপজেলায় জনগনের পছন্দের নেতাই নাই। এখন যারা নির্বাচন করছেন তারা জনগনের মন মেজাজ বুঝবে না। তাদের কাজ ধান্দা করা। টাকা কামানো, চাঁদাবাজি করা, নিজেদের পকেট ভারি করা। টাকা দিয়ে লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করা। সন্ত্রাস, বালু খেকো তৈরি, জমি দখল, মাদক কারবারি, টেন্ডারবাজ, খুনি সৃষ্টি করা। এখন জনগণের নেতা মোশাররফ চেয়ারম্যান নাই। যে জনগণ বিচার নিয়ে গেলে ন্যায় বিচার পাবে। ডেকে নিয়ে কাছে বসিয়ে সান্ত¡নার দিবে। মোটামুটি ভালো এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভূঁইয়াও এবার নির্বাচনে নাই। যাকে আমেরিকা থেকে ডেকে এনে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। কারণ তিনি চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করতেন না। কারো উপকার পারলে করেন না পারলে কারো ক্ষতি তিনি করেন না। যারা এবার প্রার্থী সবাই একই স্বভাবের লোক। কারো মধ্যে তেমন ভালো গুন নেই। মাহফুজুর রহমান কালাম, তিনি তিন তিন বার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। দল থেকে একাধিকবার বহিষ্কার হয়েছেন তিনি। তাকে দিয়ে জনগনের তেমন লাভ হবে না। তিনি চেয়ারম্যান হলে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের অবস্থা খুব খারাপ হবে। অনেক চেয়ারম্যান পরিষদেই আসতে পারবে না। সোনারগাঁয়ের চাঁদাবাজির সকল সেক্টর তার হাতের মুঠোয় চলে আসবে। বাবুল ওমর তো আরেক ধাচের লোক। আর তার যত টাকা পয়সা ও ক্ষমতা বলেন সবই যেন ক্ষমতার প্রভাবে কামাই। তবে তিনি চেয়ারম্যান হলে তার প্রভাব শুধু কাঁচপুর এলাকায়ই সীমাবদ্ধ থাকবেন সোনারগাঁয়ের সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে। নির্বাচন করার জন্য কাকে কেমন করে ম্যানেজ করতে হয়, তিনি তা জানেন। সেখানে যাকে যেটা দিতে হয় তাকে সেটাই দিয়ে তিনি মাঠ গরম করে রেখেছেন। যিনি কাঁটা খান তাকে কাঁটা, যিনি হাড় বা হাড্ডি খান তাকে হাড্ডি দিয়ে ম্যানেজ করছেন। টাকা পয়সা, ক্ষমতা দিয়ে হলেও এভাবে ম্যানেজ করে তার দাবি আদায়ে তিনি ব্যস্ত। কাকে পায়ে ধরা লাগবে, তাকে তিনি পায়েই ধরছেন। তার স্বার্থ উদ্ধারের জন্য সকল পথ অবলম্বন করছেন তিনি। রফিকুল ইসলাম নান্নু, তার কথা বলতে গিয়ে একজন বলে উঠলেন, চৌদ্দবার হজ্ব করলেও তার স্বভাব পাল্টাবে না। সে যুবলীগের সভাপতি হয়ে সোনারগাঁয়ে খুনি, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, মাদক কারবারিদের ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বানিয়েছেন। আরেকজন বলেন, সোনারগাঁয়ের রয়েলে হেফাজত নেতা মামুনুল হকের সাথে যে ব্যবহার করেছে। সে আবার চেয়ারম্যান হতে চায়। মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও তার নেই। বেছে বেছে হুজুরদের সে মামলা দিয়েছে। টাকার জন্য সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে মামলা দিয়ে। তার সাথে অমিল হওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, জামাত বিএনপি, জাতীয় পার্টি, মসজিদের ঈমামদেরকে মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করছে। সে ক্ষমতার জোরে টেন্ডারবাজি করে ব্রীজ, কালভার্ট, রাস্তা ঘাটের কাজে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে। সে সব স্থাপনা অল্প দিন পরেই ধ্বসে গেছে। মেনিখালি ব্রীজের উপর দুটি সেতু তৈরি করে সে নদীকে বালি দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে। ওই নদীতে এখন নৌকা চলে না। আলি হায়দার, তার কাজ নাই, চাকরি নাই, তিনি কিভাবে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তার কাজ বিভিন্ন উপায়ে টাকা উপার্জন করা। সে টাকার জন্যই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছে। চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য নয়। কিছু টাকা পেলে সে বসে যাবে। এটা তার সিজনাল ব্যবসা। তিনি কোম্পানি, ফ্যাক্টরির মালিকদের ফাঁদে ফেলে চাঁদাবাজি করেন। এভাবে সোনারগাঁয়ে নির্বাচন নিয়ে বিশ্লেষন করছে ভোটাররা।