বন্দরে মাকসুদের ইতিহাস সৃষ্টি
বন্দর প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী এমপি পরিবার, জেলা, মহানগর, আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি এবং উপজেলা আওয়ামীলীগ, জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ১৫০৩৫ ভোট বেশী পেয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মাকসুদ হোসেন। নানা ঘটনায় আলোচিত সেই আলহাজ্ব মাকসুদ হোসেন বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে অনেকটা স্বরনকালের ইতিহাস সৃষ্টির মত। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ পেয়েছেন ১৪৮৩৮ ভোট। বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদের জন্য ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতারা, উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের সদস্যসহ জাতীয় পার্টির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কাজ করেও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। অনেকে মন্তব্য করে বলেন, জিতেছে মানবতা, শরীরের ঘাম আর আত্মাবিশ্বাস। হেরেছে মীর জাফরদের বিশ্বাস করে কাছে রাখা, কর্মীদের অবমূল্যায়ন, হুংকার, হুশিয়ারি। বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটাররা তাদের ভোট প্রয়োগ করে বুঝিয়েছে জনগণের ভোটই আপনাদের মূল অস্ত্র, কোন হুমকি, ধমক, হুশিয়ারি, ক্যাডার বাহিনী দিয়ে কাজ হয়না। ভোটের জন্য প্রয়োজন সাধারণ মানুষকে মূল্যায়ন করা। কারন আর না হোক ৫ বছরে একবার হলেও এই জনগণকে আপনাদের খুব বেশি প্রয়োজন পড়ে। সূত্র মতে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মাকসুদ হোসেন মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় বন্দর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করেন। নির্বাচনী প্রচারণায় উপজেলাবাসীর মধ্যে ব্যপক সাড়া পেয়ে মাকসুদ হোসেন সুবিধাজনক অবস্থান তৈরী করে ফেলেন। এ ধারাবাহিকতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদকে একক প্রার্থী ঘোষণা করে মাকসুদ হোসেনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া, বন্দর, মুছাপুর, ধামগড় ও মদনপুর ইউনিয়ন পরিষদ ৪ চেয়ারম্যান সহ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠন। তারপর থেকে শুরু হয় এমপি সেলিম ওসমান বন্দরে কয়েকটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যে মাকসুদ হোসেনকে রাজাকার পূত্র বলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে নানা হুমকিদমকি। এমপি সেলিম ওসমানের নির্দেশনাকে চেলেঞ্জ করেইে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে পদ ত্যাগ করে জনগনের ভোটাধিকার ফিরে আনতে পুরোদমে নির্বাচনী মাঠে নামায় মাকসুদ হোসেন কেই বেঁচে নিয়েছেন বন্দরবাসী। নারায়ণগঞ্জের এমপি পরিবারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় মাকসুদ হোসেনকে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে গণরায় দিয়েছে বন্দরবাসী। এছাড়াও মাকসুদ হোসেন পূর্ব পূরুষ তার পিতা মরহুম এমএ রফিক পাকিস্তান আমল থেকে আমৃত্যু পর্যন্ত ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছিলেন। বড় ভাই আনোয়ার হোসেন শাহ মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর মাকসুদ হোসেন উপ নির্বাচনে মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদে টানা তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পাকিস্তান আমল থেকে জনপ্রতিনিধিত্বের তালিকায় থাকায়, পরিবারিক এ ঐতিহ্যকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মাকসুদ হোসেন। তিনি পেয়েছেন ২৯,৮৭৩ ভোট। ইতিপূর্বে বন্দর উত্তরাঞ্চল থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে কেউ বিজয়ী হতে পারেনি। পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ বিনা ভোটে। এবারের নির্বাচনে গণরায়ে মাকসুদ হোসেন নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ায় ইতিহাস রচনা করেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাইক প্রতীকের মো. আলমগীর ১৭ হাজার ৬০৬ ভোট পেয় নির্বাচিত হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ সানু। সানু পেয়েছেন ১৭ হাজার ১ ভোট। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সালিনা হোসেন শান্তা ফুটবল প্রতীকে ২৯৪৫৩ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এড. মাহমুদা আক্তার কলস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬২৮৪ ভোট।