বন্দরে চ্যালেঞ্জে হেরে গেলেন আ’লীগ
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হলেও বন্দরে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে দৌড়ঝাঁপ করেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা হেরে গেলেন। এমনকি দুই এমপিকেও দেখা গেছে তাদের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। এমনকি কেন্দ্রের উপর মহলের দ্বারেও ছুটে ছিলেন প্রার্থীকে নিয়ে। জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় ছিলেন তিন জন। এর মধ্যে একজন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশিদ। বাকি দুজনের মধ্যে একজন বিএনপি থেকে বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুল এবং অপরজন মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির নেতা মাকসুদ। ওসমান ঘনিষ্ঠ হিসেবে তাদেরও বিশেষ পরিচিতি ছিল। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনে এমএ রশিদকে সমর্থন জানিয়ে ছিলেন সদর-বন্দর আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। তার ভাই প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমানও ভাইয়ের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। জানা গেছে, স¤প্রতি বন্দর উপজেলার পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এমএ রশিদকে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের কাছে গিয়েছেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। এসময় তাদের সাথে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলও। তবে নির্বাচনের প্রাক্কালে হঠাৎ এমএ রশীদকে নিয়ে কী কারণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বরণাপন্ন হলেন আলোচিত এমপি শামীম ওসমান এবং জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতা- সেই বিষয়ে এখনই কিছু জানা যায়নি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদল এ বিষয়ে মুখ খুলেননি। এদিকে, নির্বাচনের আগে বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেও তাদের আশা পুরন হয়নি। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন শক্ত অবস্থানের কারনে জনগণের আশার প্রতিফলন ঘটেছি। এর আগে গত ৩০ এপ্রিল সদর-বন্দর আসনের সাবেক এমপি (প্রয়াত) নাসিম ওসমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বন্দরে অনুষ্ঠিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমপি শামীম ওসমান বলেছিলেন, ‘এইমাত্র যখন আমরা এখানে বসা, তখন আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আমাদের জন্য নির্দেশ এসেছে, বন্দরের নির্বাচনে স্বশরীরে অবস্থান করার জন্য। অন্য সহযোগী সংগঠনের কাছেও ওই নির্দেশ আসবে।’ শামীম ওসমানের ওই মন্তব্য নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারপরেও আওয়ামীলীগের তৃনমূল নেতাকর্মীদের একাট্টা করতে পারেনি বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগ। অনেকেই বলছেন, যেখানে উপজেলা নির্বাচন এমপিদের হস্তক্ষেপ মুক্ত করার জন্য শুরু থেকেই নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারকরা। সেখানে বন্দর উপজেলার নির্বাচনে স্বশরীরে অবস্থান করার যেই তথ্য নিজ বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করলেন শামীম ওসমান- তা নিয়ে অনেকেই নির্বাচন বানচালের চেষ্টার কলাকৌশল বলে ধরে নিয়েছিরেন। কিন্তু মাকসুদ এবং মুকুল তাদের নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণায় গিয়ে একটি সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করে বক্তব্য রেখেছিলেন। যার প্রতিফলন ভোটের মাধ্যমে ঘটেছে আর দুই এমপি চ্যালেঞ্জ ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। বন্দরের একাধিক নেতা কটাক্ষ করে বলেন, সেলিম ওসমান তার বিবৃতিতে বলেছিলেন মাকসুদ নির্বাচিত হলে বন্দর মিনি পাকিস্তান হবে। এবার মাকসুদ বিজয়ী হয়েছে তার হলে এমরি কথায় তিনি কী মিনি পাকিস্তানের এমপি? এমন নানা গুঞ্জন চলছে বন্দর জুড়ে। আর বন্দরের নির্বাচনে ওসমান পরিবার থেকে সমর্থন দেয়া এম এ রশিদ, সানাউল্লাহ সানু ও পারভীন ওসমানের সমর্থন পাওয়া মুকিত পরাজিত হওয়ার সাথে সাথে ওসমান পরিবারের পরাজয় বলে অনেকে মনে করছেন।