আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৩:২৪

পুলিশের নিরবতায় মাদকে সয়লাব ফতুল্লা!

ডান্ডিবার্তা | ১২ মে, ২০২৪ | ১২:২৬ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ফতুল্লা মডেল থানায় ওপেন হাউজ ডে বন্ধ করে দেয়ার ফলে মাদক-কিশোরগ্যাংসহ নানাবিধ অপরাধকর্মের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বেড়েছে ইয়াবা, গাঁজা, ফেনসিডিল আর হেরোইনের মতো ভয়ঙ্কর মাদকের জমজমাট ব্যবসা। তবে মাদকের বিরুদ্ধে নামকাওয়াস্তে অভিযান চললেও মাদকের টুঁটি টেনে ধরতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে সচেতন মহলের দাবি ফতুল্লা মডেল থানায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ওপেন হাউজ ডে ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়ায় মাদকসহ কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতা বেড়েছে। মাদক ব্যবসায় ও সেবনে কিশোররাই বেশি জড়িয়ে পড়েছে। ইতিপুর্বে থানায় ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত হয়ে মাদকের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য দিতেন। এতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়ে পরবর্তী ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে অভিযোগকারীকে তার দেওয়া তথ্যের বিষয় জানানো হতো। একইভাবে অনেকেই কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশের সঙ্গে প্রতিকারের বিষয়ে আলোচনা করতেন। কিন্তু কি কারনে আধুনিক সমাজ বিনির্মানে ফতুল্লা মডেল থানায় ওপেন হাউজ ডে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তা বিষয়েও জানেনা থানাধীন এলাকায় বসবাসকারীরা। ইদানিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেখা যায় মাদক সয়লাব অমুক বা তমুক এলাকা। জোরালো অভিযান কিংবা চিরুনী অভিযানেরও জোড় দাবী জানানো হচ্ছে উক্ত এফবি আইডি গুলো থেকে। কিন্তু জেলা কিংবা থানা পুলিশের দৃষ্টিশক্তি হওতবা পড়লেও সেগুলোতে সেগুলোকে আমলে নিচ্ছেনা তারা। কিন্তু এভাবে দেখেও না দেখার ভান করার ফলে দিনের পর দিন বেড়েই চলছে মাদকের প্রবনতা আর নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষের জীবন। জেলার অন্যতম শিল্পাঞ্চল হিসেবে খ্যাত ফতুল্লা। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কর্মজীবি মানুষের ভিড়ে ফতুল্লা থানা এলাকাটি জেলার অন্যতম জনবহুল এলাকা। ফলে প্রতিনিয়ত ছোট-বড় অপরাধ লেগেই থাকে এখানে। সন্ত্রাস, মাদক, ভুমিদস্যুতাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করছে যে যার মত করে। আর এ শিল্প এলাকার অন্যতম অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে মাদক নিয়ে। এখানে মাদক বিক্রি যেন প্রকাশ্যে রুপ ধারন করেছে। থানা পুলিশের নীরবতায় মাদক বিক্রেতারা অনেটাই বীরদর্পে চালাচ্ছেন তাদের ব্যবসা। এক সময়ে যে সকল মাদক বিক্রেতারা পুলিশের ভয়ে,মামলার ভয়ে অনেকটা গোপনে মাদক বিক্রি করতো এখন সেটা পুরোটাই ওপেনে চলছে। এ জন্য দায়ী করছেন থানা পুলিশকে। কারন পুলিশের নীরবতার ফলে বাধাবিহীনভাবে মাদক বিক্রি করে অনেক মাদক ব্যবসায়ী আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছেন। মাদক অধ্যুষিত ফতুল্লা থানা এলাকার অন্যতম মাদক স্পটগুলো হচ্ছে, ফতুল্লা স্টেশন ব্যাংক কলোনী, জোড়পুল বালুরমাঠ, বায়েজিদ বোস্তামী রোড, দাপা আদর্শ স্কুল, হাক্কানী কবরস্থান সংলগ্ন বালুর মাঠ এলাকায় ডাকাত শাহীন, মহসিন, শাকিল এই ত্রিরতেœর মাদক ব্যবসা চলছে প্রকাশ্যে। আলীগঞ্জ রেললাইন, মাসদাইর গাবতলী, মাসদাইর বাজার, গুদারা ঘাট, বেকারীর মোড়, পতেঙ্গার মোড়, ইসদাইর রেললাইন, চাষাঢ়া রেলষ্টেশনসহ প্রায় ২ শতাধিক স্পটে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাদক বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মাসদাইর বেকারীর মোড় এলাকায় যুবলীগ নেতার ভাইয়ের মাধ্যমে একটি ফ্লেক্সিলোড দোকান থেকে ফেন্সিডিল বিক্রি করছেন উক্ত দোকানী। সপ্তাহে প্রায় ৩বার একটি মিনি ট্রাকের মাধ্যমে আনা হয় উক্ত ফেন্সিডিল। বিক্রেতারা প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়না। উক্ত এলাকাগুলোতে প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদকের বেচাকেনা। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিশেষ পেশার কিছু ব্যাক্তি এবং প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এখানে মাদক বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এলাকার গলিপথে মোড়ে মোড়ে তাঁদের সোর্স থাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রবেশ করলে মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদে চলে যায়। মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাঁড়াশি অভিযান দাবি করেছে এলাকার সচেতন মহল। ফতুলার দাপায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বোমা লিপু নিহতের পর নিহতের ভাই শাহিন ওরফে ডাকাত শাহিন ও আলামিন ওরফে ভাতিজা আলামিন নিয়ন্ত্রণ করেছে দাপা, শিয়াচর, রেল স্টেশন, পিলকুনী, ব্যংক কলোনী জোড়পুল এলাকার বৃহত্তর মাদক বাজার। এই দুই মাদক ব্যবসায়ীর হয়ে মাদক বেচা-কেনায় সক্রিয় রয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক সেলসম্যান। আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান কখনো কখনো মাদক নিয়ে গ্রেফতার হলেও এই দুই শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী রয়ে যায় প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরে।
এছাড়া মহসিন ওরুফে মাইছ্যা মহসিন, শাকিল পৃথক সিন্ডিকেট গড়ে তুলে পিলকুনি হাক্কানী কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে মাদক ব্যবসা করছে। বিশাল সিন্ডিকেট নিয়ে তাঁদের মাদকের রাজ্য গড়ে তুলছে। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু হয় তাঁদের মাদক বেচাকেনা। কিছু আগে মাইছ্যা মহসিন অর্ধকোটি টাকার মাদকসহ ঢাকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম গ্রেফতার করে। মাসদাইর বেগম রোকেয়া খন্দকার পৌর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে সোর্স কসাই নাসিরের দুই ছেলে ও একমাত্র মেয়ে, কাকন ওরফে পোড়া কাকনগংরা পুরো এলাকাটি নিয়ন্ত্রন করছে বিভিন্ন প্রকারের নেশাসামগ্রী বিক্রির মাধ্যমে। মাঝে-মধ্যে থানা পুলিশ কিংবা গোয়েন্দা পুলিশ আটক করলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দ্রæত বের হয়ে আসছে এ সকল পেশাদার মাদক ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা আরো জানান, স্থানীয় কিছু নেতা ও বিশেষ পেশার ব্যক্তিদের প্রতিদিন মোটা অংকের মাসোহারা দিয়েই উক্ত চক্রটি এখানে বাধাহীনভাবে মাদক বিক্রি করছে। পাশাপাশি রয়েছে পুলিশের সোর্স। মাদক নির্মুলে সহযোগিতার পরিবর্তে যদি উক্ত ব্যক্তিরা উল্টো তাদের টাকার কাছে নত স্বীকার করেন তাহলে মাদক নির্মুল নয় বরং এর প্রবনতা আরো ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। আমরা উক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য র‌্যাব-১১’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা