আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৩:৩৮

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র!

ডান্ডিবার্তা | ২৪ মে, ২০২৪ | ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি বড় অংশীদার। ৩৭ বছর ধরে বøæ-হেলমেটের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন বিরোধপূর্ণ দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে একটি মহল স¤প্রতি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকে বাংলাদেশি সদস্যদের বাদ দিতে অপতৎপরতা শুরু করেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সাবেক সেনাপ্রধানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও বিদেশি সংবাদমাধ্যমে শান্তিরক্ষীদের প্রশ্নবিদ্ধ করে প্রচারণা এরই অংশ হতে পারে বলে তাদের ধারণা। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, দু-একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতেই পারে, কিন্তু সেটা আইনি প্রক্রিয়ায় প্রমাণিত হতে হবে। ঢালাও অভিযোগ করলে হবে না। আর এ ধরনের অভিযোগ তুলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম থেকে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বাদ দেওয়া যাবে না। এ প্রক্রিয়া এত সহজ নয়, খুবই জটিল। সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৮৮ সালে সেনাবাহিনীর ১৫ সদস্যের একটি পর্যবেক্ষক দল ইরাক-ইরান শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগ দেয়। এর মাধ্যমে জাতিসংঘের পতাকাতলে শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ শুরু করে বাংলাদেশ। এক বছর পর ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পুলিশ নামিবিয়ায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে যোগ দেয়। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনী মোজাম্বিক এবং বাংলাদেশ বিমানবাহিনী বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। এরপর থেকে ৩৭ বছর ধরে শান্তিরক্ষা মিশনে সুনামের সঙ্গে কাজ করে আসছে সশস্ত্র বাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশ। পেশাদার মনোভাব, অবদান ও আত্মত্যাগের ফলে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে নিজের অবস্থানও সুসংহত করেছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বর্তমানে কয়েকটি মিশনে ছয় হাজারের বেশি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। এ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী তাদের মিশন শেষ করেছেন। তাছাড়া মিশন এলাকায় সংঘাতপূর্ণ ও প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ১৬৮ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আহত হয়েছেন ২৬৬ জন। বিশ্বের ৪৩টি দেশে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছেন। সশস্ত্র বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের ২০২৩ সালের তথ্য অনুযায়ী, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে ১২৫টি দেশের ৮৭ হাজারের বেশি শান্তিরক্ষী ১২টি অপারেশনে দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। এ পর্যন্ত বিশ্বের ৪৩টি দেশে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা মিশনে অংশ নিয়েছেন। সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরের দিন জার্মানভিত্তিক একটি গণমাধ্যম বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও র‌্যাব নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এটাকে উদ্দেশ্যমূলক বলছে সংশ্লিষ্ট একটি পক্ষ। ওই প্রতিবেদনে অভিযোগ আনা হয়েছে, শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশও নির্যাতন ও হত্যার সঙ্গে জড়িত মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কয়েকজন অজ্ঞাত কর্মকর্তার বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। এসব প্রতিবেদন ও সাবেক একজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র কিনা জানতে চাইলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব) মোহাম্মদ আলী শিকদার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকতেই পারে। সব জায়গায়ই দু-একজন অপরাধী থাকে, থাকতে পারে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেই যে সেটা সঠিক তা কিন্তু নয়। সেটা সঠিক নাও হতে পারে। তিনি বলেন, শান্তিরক্ষীতে বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পাঁচ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছেন। সেখানে যদি কোনও অপরাধী থাকেও সেটা হাতে গোনা কয়েকজন হতে পারে। আর এই অভিযোগ সঠিক নাও হতে পারে। কারও বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ উঠলেই সেটা প্রমাণিত হয় না যে সে অভিযুক্ত ও দোষী, যদি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত না হয়। এটাই হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইন, অভিযোগ করলেই হবে না যে সে অভিযুক্ত। সুতরাং এই কথাগুলো যারা বলছেন তারা কোন ভিত্তিতে বলছেন? যার কোনও সোর্স নেই। এটা সম্পূর্ণ অনুমানভিত্তিক অভিযোগ। জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী কীভাবে নিয়োজিত হয়, প্রক্রিয়াটা কী, কারা এটা করেন, সেটা সম্পর্কে তাদের ধারণা আছে বলে মনে হয় না। যদি ধারণা থেকে থাকে, তাহলে যারা এটা বলেছেন, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশকে হেয় করার জন্য বলছেন। যদি সেটা না হয়, তাহলে তারা এ প্রক্রিয়াটা জানেন না, যোগ করেন তিনি। মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি সদস্য রাষ্ট্র। সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ নিয়মিত সদস্য দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে যদি কোনও দেশকে বাদ দিতে হয়, তাহলে সেটারও একটা প্রক্রিয়া আছে। জাতিসংঘের যে নিরাপত্তা পরিষদ আছে সেখানে যেতে হবে। বলতে হবে আমরা এসব কারণে অমুক দেশকে বাদ দিতে চাই। এটা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য কোনও দেশ থেকে প্রস্তাব উঠতে হবে। প্রমাণ দিতে হবে। বিশ্লেষণ হবে। তারপর ভোটে যাবে। সেখানে যদি একজনও ভেটো দেয়, তাহলে এই প্রস্তাব পাস হবে না। বাংলাদেশ তো বন্ধুহীন রাষ্ট্র নয়। যাদের ভেটো দেওয়ার শক্তি আছে, সেখানেও দু-একটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং এমন প্রস্তাব পাস হবে না, এটা আমরা নিশ্চিত। আর জেনারেল আজিজ এখন অবসরে। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ এসেছে। এই অভিযোগ কী আদালতে প্রমাণিত হয়েছে?




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা