আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | বিকাল ৩:০২

নজরুল এসেছিলেন আমাদের প্রিয় নারায়ণগঞ্জে

ডান্ডিবার্তা | ২৫ মে, ২০২৪ | ১০:৩৭ পূর্বাহ্ণ

জাহাঙ্গীর ডালিম
বাংলাদেশের মাটিতে যেমন মহান কবি কাজী নজরুল ইসলাম চির শায়িত আছেন। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসুস্থ কবিকে কলকাতা থেকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন ২৪ মে ১৯৭২ সালে। চারটি বছর নজরুল ঢাকায় রাস্ট্রীয় সেবাশুশ্রয়ার মধ্যে ছিলেন। ১৯৭৬ সালে এই মহা বিদ্রোহী কবির চোখ চির তরে বন্ধ হয়। নজরুল তার প্রথম দিকের অভিশাপ “শীর্ষক একটি দীর্ঘ কবিতায় লিখেছিলেন–যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে/ অস্তপারের স›দ্ব্যতারায় আমার খবর পছবে / বুঝবে সেদিন বুঝবে। আজ আমরা তার কথাটি সত্যি বুঝতে পেরেছি। নারায়ণগঞ্জের গুনি শ্রদ্ধেয় কবিদের সাথে আলাপ করে জানতে পেরেছি ১৯১৪ সালে কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রথম নারায়ণগঞ্জে আসেন। তার বয়স তখন পনের ছিল। সে বার মূলত তাঁর যাএার গন্তব্যটি ছিল ময়মনসিংহ। তিনি নারায়ণগঞ্জ হয়ে ময়মনসিংহ যান। তখন যাতায়াত হতো লঞ্চঘাট দিয়ে। এখনকার মতো রাস্তাঘাট উন্নত ছিল না। নজরুল ইসলাম ১৯২৬ সালে ২ জুলাই নারায়ণগঞ্জে বসে অভিযান কবিতাটি লিখেন। কবিতাটি মোহাম্মদ কাসেম (১৯০৫–১৯৭০) সম্পাদিত মাসিক অভিযান পএিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়। মাসিক অভিযান নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত হতো। তার প্রথম দু’ টি সংখ্যা নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রকাশিত হয়। প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল বাংলা–ভাদ্র ১৩৩৩ সালে। পরে কলকাতা থেকে নতুন রুপে অভিযান এর প্রকাশিত হয়েছিল। নজরুল তার পান্ডুলিপিতে অভিযান কবিতার শেষে স্বাক্ষর করে লিখেছিলেন–নারায়ণগঞ্জ–২-৭-২৬। অভিযান নতুন পথের যাএা পথিক / চালাও অভিযান উচ্চ কনঠ উচ্চারণ আজ–মানুষ মহীয়ান চারিদিকে আজ ভীষণ মেলা / খেলবি কে আয় নতুন খেলা জোয়ার, জলে ভাসিয়ে ভেলা বাইবি আজ ভীষণ উজান / ফেড়ে চলি মাতাল। নারায়ণগঞ্জে ২–৭–২৬। আমি পূরব দেশের পুরনারী গানটি নজরুল ইসলাম শীতলক্ষ্যা ঘাটে বসে রচনা করেন। ১৯৭৪ সালে নজরুল শেষ বারের মতো নারায়ণগঞ্জে আসেন। সাংস্কৃতিক সংগঠন শাপলার পক্ষে থেকে নজরুল জয়ন্তীতে কবিকে সংবধর্না জানানো হয়। নজরুলের সাথে এসেছিল—-রমেশ দাশগুপ্ত, উমা, কাজী খিলখিল, কাজী মিষ্টি, ও রেণু ভৌমিক। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সেই অনুষ্ঠানে হাজার হাজার লোকের সমাগম হয়ে ছিল। রাস্তা বন্ধ হয়েছিল। জনগণের চাপে নারাযণগঞ্জ ক্লাবের পূর্ব দিকের দেয়াল ভেঙে পড়েছিল ।জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের আকাশে নবধুমকেতু। জন্মে ছিলেন ১৮৯৯খ্রিস্টাব্দে ২৪ মে বাংলা ১৩০৬ সালের ১১ জৈষ্ঠ্য বধমান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় আসালসোলা মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে। পিতা ফকির আহম্মদ। মাতা জাহিদা খাতুন। মাত্র নয় বছর বয়সে পিতা হারিয়ে সীমাহীন অর্থ কষ্টে দিন কাটে। দু:খ দারিদ্র্যের মধ্যে কাজ নেয় রুটির দোকানে, কখনো অন্যের দায় দাক্ষিন্যে বাল্য ও কৈশর অতিবাহিত করার পর প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে ৪৯ নং বাঙালি পল্টনে নাম লিখিয়ে নৌ-সেনার প্রশিক্ষণ শেষে করাচিতে স্থায়ী হন। যুদ্ধের পর ১৯২০ সালে কলকাতায় ফিরে বাঙালির মুসলিম সাহিত্য সমিতির অফিস ঘরে আস্তানা গাড়েন কমরেড মুজাফফর আহমদের মত মানুষের স্নেহ সুধায় অভিষিক্ত হন কবি। ১৯২২ সালে কুমিল্লার সৈয়দা খাতুন ওরফে নার্গিস বেগমের সঙ্গে অসফল প্রণয় পরিনয়ের পর ১৯২২ সালে লিখলেন ‘আনন্দময়ীয় আগমনে ফলশ্রæতিতে হল কারাবাস। পরবর্তীতে ১৯২৪ সালে ২৫ এপ্রিল কুমিল্লার প্রমীলা সেন গুপ্তর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কলকাতায়। দুটি সন্তানের অকাল মৃত্যুর পর সব্যসাচী অনিরুদ্ধের জন্ম হয়। ১৯৩৯ সালে স্ত্রী প্রমীলার পক্ষাঘাত হয়ে শয্যাশায়ী হলেন। দু:খের মধ্যে যেনো আরো দ্বিগুণ রুপে সামনে এসে দাঁড়ায় ১৯৪২ সালে কবি নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন চিরতরে। কবি পতœী ১৯৬২ সালে মারা যান। দুভাগ্য পিছু ছাড়েনি দুখু কবির জীবন থেকে। নিদারুণ অর্থ কষ্টে রোগাক্লিষ্ট কবি তার পরিবার নিয়ে অযতেœ অবহেলায় দিনযাপন করেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের কবিকে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার মূল প্রেরণা পেয়ে ছিলেন সাহসী কবি নজরুলের বিদ্রোহ ও সাম্যের কবিতা থেকে। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই বিদ্রোহী প্রতিভা কে স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে এসে তাকে জাতীয় কবির সম্মানে ভূষিত করেন। স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি উজ্জ্বল নক্ষএ উপহার দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এ যেন কবির প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসার বহি:প্রকাশ।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা