আজ মঙ্গলবার | ১২ আগস্ট ২০২৫ | ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৭ সফর ১৪৪৭ | রাত ১২:৩১

ফতুল্লায় সড়কে এখন নৌকা ভরসা

ডান্ডিবার্তা | ০২ জুন, ২০২৪ | ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে ভারীর বৃষ্টির ফলে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের নিম্মাঞ্চলে। এসব এলাকার বেশীরভাগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। বসতবাড়ি প্রবেশ করেছে ময়লা, দূর্গন্ধযুক্ত পানি। সড়কে রিকশা, গাড়ীর পরিবর্তে চলছে নৌকা। ভারী বর্ষনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় স্থবিরতা নেমে এসেছে এসব এলাকায়। স্বাভাবিক কর্মকান্ডে গতি হারিয়ে দূর্বিষহ জীবনযাপন করছে কয়েকলাখ মানুষ। ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা ঘুরো দেখা গেছে, বৃষ্টি পানি চলাচলের রাস্তা ছাপিয়ে বাড়ীর আঙ্গিনা এবং মানুষের বসত ঘরে প্রবেশ করেছে। কোথাও হাটু,কোমর কিংবা বুক সমান পানি জমে। চলাচলের সড়কে রিকশা বদলে চলছে ভ্যান,নৌকা। অনেকে আবার বৃষ্টির পানি মারিয়ে জীবিকার টানে ছুটে যাচ্ছেন কর্মস্থলে। টানা বর্ষনে বসতঘরে পানি প্রবেশ করার নিরাপদে আশ্রয় নিচ্ছেন অনেক বাসিন্দা। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থায়ী সমাধান চায় ডিএনডিবাসী। তবে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান ওসমান বুধবার বিকেলে ফতুল্লায় পানি বন্দী এলাকা পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ সমস্যা কয়েকদিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে। ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুরপাড় সড়কে রিকশার পরিবর্তে ভ্যান এবং নৌকা চলতে দেখা গেছে। এই সড়কের দুইপাশে কয়েকলাখ মানুষের বসবাস। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছে এসব এলাকার মানুষ। মানুষের বাড়ীঘরে পানি প্রবেশ করেছে। শুধু এই এলাকায়ই নয় পাশ্ববর্তী ইসদাইর, গাবতলী তাগারপার, আজমেরীবাগ, সস্তাপুর, লালখা, রামারবাগ, কোতালেরবাগ, সস্তাপুর এলাকা জুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, কুতুবপুরের দৌলতপুর, আদর্শনগর, মুন্সীবাগ এলাকার বসতবাড়ীতে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার মানুষ কয়েকদিন ধরে পানি বন্দী জীবনযাপন করছে। বাড়ীর আঙ্গিনা, রান্না ঘর, টিউবওয়েল, বাথরুম পানির নিচে তলিয়ে আছে। এখানেই শেষ নয়, এসব এলাকার অনেক বাসিন্দা এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। অনেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কৃত্রিম জলাবদ্ধতার ফলে প্রভাব পরেছে এলাকার স্বাভাবিক কর্মকান্ডেও। ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের শহীদ নগর, দৌলতপুর, মুন্সিবাগ, আদর্শ নগর, নূরবাগ, পিলকুনী, তক্কার মাঠ সহ আশপাশের প্রায় বেশ কয়েকটি গ্রামে টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে পানিতে। ঘরবন্দী জীবন যাপন করে এসব এলাকার বাসিন্দারা। কুতুবপুর ইউনিয়ন সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট। ড্রেন ব্যবস্থা না থাকার কারণে অল্প সময়ে তলিয়ে যায় অধিকাংশ রাস্তাঘাট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ডোবা, নালা ভরাট হয়ে বৃষ্টির পানি মানুষের বসতবাড়ি, ঘরে প্রবেশ করেছে। একই অবস্থা বিরাজ করছে সিদ্ধিরগঞ্জের অনেক এলাকায়। নি¤œাঞ্চল তলিয়ে গেছে ময়লা পানিতে। মিজমিজি এলাকায় গিয়ে মানুষের বসতবাড়ীতে পানি দেখাগেছে। ময়লা পানিকে সঙ্গী করেই এই এলাকার মানুষের বসবাস। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, ভেরি বাঁধের ভেতরের এসব এলাকাগুলো সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। দ্রæত সময়ের মধ্যে বৃষ্টির পানি বেরিয়ে যেতে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকায় বছরে বেশীরভাগ সময়ে এসব এলাকার কিছু কিছু জায়গায় জলাবদ্ধতা থাকে। দু’দিনের বৃষ্টির কারণে পুরো এলাকা জুড়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ায় কয়েক লাখ মানুষ পানি বন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জলাবদ্ধতা খবরে এলাকাবাসীর কাছ ছুটে আসেন ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান। জলাবদ্ধতা নিরসনে তিনি বলেন, ‘ফতুল্লার লালপুর এলাকা ফতুল্লার হার্ট। এখানে এলাকার মানুষের কিছু ব্যর্থতা আছে। সে ব্যর্থতা হচ্ছে রাস্তা উচু, জায়গাটা নিচু। সে কারণে প্রায় তিন লক্ষ মানুষ এখানে পানিবন্দি হয়ে আছেন। গতবার আমরা জেলা পরিষদের সহায়তায় তিনটি পাম্প বসিয়েছিলাম। প্রায় অর্ধকোটি টাকার উপরে খরচ হয়েছিল। এখানে একটা টান্সফর্মার ছিল। টান্সফর্মার খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ কারণে এবার প্রচুর পানি জমে গেছে। বাড়ি-ঘর তো রয়েছে বাথরুমের ময়লা মসজিদ-মন্দিরে গিয়ে প্রবেশ করেছে। এজন্য আমি দুঃখিত এবং লজ্জিত।’ ‘আমি সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাই। এখানে ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফর্মার লাগে। এটা ছিল এখানে, খুলে নেওয়া হলো কেন? এখান থেকে ৯০ লাখ টাকা বকেয়া বিল আছে। এগুলো পরিশোধ হয়নি, কে পরিশোধ করবে? ইউনিয়ন পরিষদ বা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ৩১৫ কিলোওয়াটের ট্রান্সফর্মার না হলে তিনটা পাম্প চালানো যাবে না’, বলেন তিনি। নতুন ট্রান্সফর্মার নিজের টাকা কিনে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘পরবর্তী বিলগুলো আমরা দেওয়ার চেষ্টা করবো। তবে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য এলজিআরডির সহযোগিতা লাগবে। আগামীকালের মধ্যে টান্সফর্মার কেনার জন্য টাকা দিয়ে দিচ্ছি। আশা করি আগামী দুই তিনদিনের মধ্যে পানি নামিয়ে ফেলতে পারবো।’

 




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা