অস্তিত্ব হারাচ্ছে আওয়ামীলীগ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামীলীগের প্রভাব এটাই ছিল তাদের প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। তারা বিএনপি আমলের সকল উন্নয়ন কাঠামোর নাম ফলক ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জে জিয়া হলের মাম ফলক ও শহীদ জিয়ার মূরাল ভেঙ্গে ফেলে। সব কিছুতে তাদের নাম স্থান করে নেয়। নারায়ণগঞ্জের সকল সেক্টর ছিল আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের দখলে। প্রতিটি সেক্টর থেকে চাঁদাবাজি ও দখলবাজিতে অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষ। নারায়ণগঞ্জের মানুষ গডফাদার শামীম ওসমান বাহিনীর ভয়ে তটস্থ ছিল। কাকে কখন গুম করা হয় তার কোন হিসাব নেই। সেই সাথে নারায়ণগঞ্জে যুবরাজ খ্যাত হাজী সাহেব ছিল সন্ত্রাসের মহা নয়ক। মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে গুম ও বিরোধী মত দমনে ছিল পটু। তার ছিল বিশাল অস্ত্রধারী হোন্ডা বাহিনী। নারায়ণগঞ্জে খুন হয় ত্বকী, চঞ্চলসহ অনেকে। একে একে অপ্রতিরোধী হয়ে উঠে হোন্ডা বাহিনী। ব্যবসায়ীদের ধরে এসে টর্চার সেলে বন্ধী করে হাতিয়ে নিত লাখ লাখ টাকা। যার চলনবলন ছিল ভারতীয় সিনেমার ভিলেনের মত। মানুষ তাদের অত্যাচারে এতটাই অতিষ্ট ছিল যা মানুষ ভয়ে মুখ খুলে বলতে সাহস পেত না। তাদের ছিল সব কিছুতে হস্তক্ষেপ। স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের অপহরণ করে টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ বহু অপকর্মের স্বাক্ষি নারায়ণগঞ্জ। গত বছরের ৫ আগষ্টে গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে গডফাদার ও তার পরিবারের লোকজন পালিয়ে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও পুনরায় বিএনপির কিছু নামধারী নেতাদের কারণে সেই আগের অবস্থায় ফিরেছে নারায়ণগঞ্জের অবস্থা। এমনটাই অভিযোগ সাধারণ মানুষের। এদিকে আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পর আওয়ামীলীগ কয়েক বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। আওয়ামীলীগ সরকারি অর্থ ব্যায় করে যা কিছু করেছে তাতে শেখ হাসিনা পরিবারের নাম ব্যবহার করেছে। তাই সাধারণ মানুষের চাপে ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আবেদের প্রেক্ষিতে বর্তমান অন্তবর্তি সরকার আওয়ামীলীগের নামে যত স্থাপনা বা অবকাঠামো করেছে এর সবকটির নাম আস্তে আস্তে পরির্বত করে চলেছে। ইতি মধ্যে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের সদস্যদের নামে নামকরণ করা ৮০৮টি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করেছে অন্তর্বতীকালীন সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে নামকরণ করা আরও ১৬৯টি স্থাপনার নাম পরিবর্তনের প্রক্রিয়া চলছে। প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, বিগত সরকারের ১৬ বছরে দেশের ৯৭৭টি অবকাঠামো ও প্রতিষ্ঠানের নাম সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদদের নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে সেনানিবাস, বিমানঘাঁটি, নৌবাহিনীর জাহাজ, মেগাসেতু, সড়ক, স্থাপনা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, গবেষণাকেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যেই এ প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। অবশিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম পরিবর্তনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে করে দেশে আওয়ামীলীগের নাম চিহৃ মুছে ফেলার মিশন চলছে। আর এতে করে আওয়ামীলীগের অস্থিত্ব হারাতে বসেছে। গণহত্যাকারী আওয়ামীলীগের নাম সাধরণ মানুষ দেখতে চায় না। তাই নামগুলি পরির্বতন করায় সাধারণ মানুষ বর্তমান অন্তবর্তি সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে।