
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে সরানোর জন্য শুরুতে এক-এগারোর অন্তর্বতী সরকার, পরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘ সময় ধরে নিখুঁত পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এই ষড়যন্ত্রের প্রধান হাতিয়ার ছিল অসংখ্য মিথ্যা মামলা ও শাস্তি। ৭৫টি মামলা ঠুকে দেওয়া হয় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে কয়েকটিতে তাঁর সাজাও হয়, বাকিগুলোর বিচার বছরের পর বছর ধরে চলছিল।
দেশে ফিরলেই নিশ্চিত তাঁর ঠিকানা হতো জেলখানায়। বিপন্ন হতো তাঁর জীবন। এই মামলাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। পরদিন মতিঝিল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা করা হয়। পরে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলার রায়ে তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদ- এবং ১৯ জনকে মৃত্যুদ-ে দ-িত করা হয়। তবে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ তদন্ত ও সাক্ষ্যগ্রহণে গুরুতর অনিয়মের কথা উল্লেখ করে তাঁকে এবং অন্য আসামিদের খালাস দেন। রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলেও গত বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আগের খালাসের রায় বহাল রাখেন। এই রায়ের সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, শেখ হাসিনা ও তাঁর দলের স্বৈরশাসনমূলক ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। ইতিহাসের নির্মম পরিহাস, আজ তাঁদের পালাতে হচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক মতপার্থক্য বা ক্ষমতার জন্য বিরোধীদের ওপর বছরের পর বছর ধরে নির্যাতন, হত্যা, লাশ গুমÍএসব কাজ করেছে শেখ হাসিনার দল ও সরকার, যা কোনো সভ্য দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এসব ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন শেখ হাসিনা, তাঁর পুলিশ, র্যাব এবং অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এই দীর্ঘ অন্ধকারের মধ্যেও আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন তারেক রহমান। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুধু একজন নেতা নন; তিনি ‘সবার বাংলাদেশ’ গড়ার স্বপ্নদ্রষ্টা। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে নিরলসভাবে কাজ করে তিনি সত্যিকারের জননেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি হলো সুষম উন্নয়ন, বৈষম্যহীন সমাজ এবং সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। তিনি বারবার বলেছেন, ‘গণতন্ত্র মানে কেবল ভোট নয়; গণতন্ত্র মানে মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা এবং সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস নেই। বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে স্বাধীন ও সার্বভৌম পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করবেÍএ ক্ষেত্রেও কোনো আপসের সুযোগ নেই। ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার, যা তারেক রহমানের রাষ্ট্রচিন্তা ও দেশপ্রেমের গভীর অভিব্যক্তি। তিনি এই বাক্যের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চেয়েছেনÍরাষ্ট্র পরিচালনায়, নীতি নির্ধারণে এবং রাজনীতিতে ব্যক্তি, দল কিংবা গোষ্ঠীর স্বার্থ নয়; সর্বাগ্রে স্থান পাওয়া উচিত দেশের সার্বিক কল্যাণ, জনগণের অধিকার এবং স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অগ্রাধিকার। তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ৫৪ বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন যদি আমরা এভাবে দেখি ১৯৭১ সাল ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের, আর ২০২৪ সাল ছিল দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার। ’ তারেক রহমানের ভাষায়, ‘দেশ তো শুধু আমাদের দল নিয়ে নয়, আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে নয়; দেশ হচ্ছে দেশের মানুষকে নিয়েÍপ্রায় ২০ কোটি মানুষকে নিয়ে দেশ। তিনি রাজনৈতিক কর্মীদের বারবার সতর্ক করেছেন, ‘আপনাদের চলাফেরা, কথাবার্তা, ভাবভঙ্গিÍসবকিছুতে জনগণের আস্থা যেন অটুট থাকে। আমরা যদি জনগণের আস্থা হারাই, তাহলে সারা দিন আলোচনা করে লাভ নেই। জনগণের আস্থা ধরে রাখাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। ’ তিনি রাজনৈতিক আত্মতুষ্টিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এটা ভাবলে ভুল হবে, সবকিছু একা তারেক রহমান সামলে নেবেন। আমাদের সবাইকেও দায়িত্ব নিতে হবে। তাঁর নেতৃত্বে জনগণই মূল কেন্দ্রে। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য রাজনীতিকদের প্রথম দায়িত্ব হলো জনগণের কাছে যাওয়া। কৃষক, শ্রমিক, নারী, শিক্ষক, প্রতিবন্ধী, যুবক, তরুণ, শিশু, প্রবীণÍসবার কথা শোনা এবং তাদের জন্য কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কী করতে চাই কৃষকের জন্য, শিক্ষকের জন্য, নারীর জন্য, তা মানুষকে জানাতে হবে। চার দেয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, আমাদের পরিকল্পনা জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। তারেক রহমানের স্বপ্ন একটি গণতান্ত্রিক, সুশাসিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র, যেখানে মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে, সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বৈষম্য হ্রাস পাবে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, স্বচ্ছতার অভাব, সহিংসতা, দমন-পীড়ন, বাকস্বাধীনতার সংকটÍএসবই চ্যালেঞ্জ। ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বিভাজন জাতীয় ঐক্যের পথে বড় বাধা। দলীয় নেতাকর্মীদের দুর্নীতি সুশাসনকে দুর্বল করে এবং প্রতিপক্ষের হাতে রাজনৈতিক সুবিধা তুলে দেয়। এই বাধা কাটিয়ে ওঠার জন্য তারেক রহমান জোর দিয়েছেন দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর শাস্তি, শক্তিশালী নৈতিক কোড, কার্যকর আইন এবং স্বচ্ছ দলীয় নীতিমালায়। প্রশিক্ষণ, জবাবদিহি এবং জনকল্যাণমূলক মনোযোগ নিশ্চিত করে নেতাকর্মীদের কার্যকর করা জরুরি। দলীয় অভ্যন্তরীণ নির্বাচনে স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং জনগণের সমস্যার সমাধানে মনোযোগী হলে নেতাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে। এ জন্য এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তারেক রহমানকে। তারেক রহমানের অপেক্ষায় বাংলাদেশ। গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশ চলছে এক গভীর রাজনৈতিক অভিভাবকহীনতায়, যেখানে নেতৃত্বহীনতার শূন্যতাই জাতীয় অস্থিরতার মূল কারণ। এটা বর্তমানেও চলমান। এই পরিস্থিতিতে তাঁর নেতৃত্ব একান্তই অপরিহার্য। শুধু বিএনপি নয়, দেশের জনগণ তাঁর প্রতীক্ষায়Íতিনি যেন তাঁদের আশা, স্বপ্ন এবং অধিকার ফিরিয়ে আনার একমাত্র আশ্রয়। মামলাগুলোর ফয়সালা এখনো চলমান থাকলেও তাঁর উপস্থিতি এখন আগের চেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমরা আশা করি, তিনি খুব শিগগিরই দেশে ফিরে আসবেন। দেশের প্রতি দায়বদ্ধতায় জনগণের মুখে হাসি ফোটাবেন। একটি গণতান্ত্রিক, সুশাসিত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবেন, যা শুধু একটি লক্ষ্য নয়; বরং আমাদের সবার আশা, স্বপ্ন ও আকাংক্ষার প্রতিফলন।
হাবিবুর রহমান বাদল বাংলাদেশের গনমাধ্যম এখন স্বাধীন হলেও জুলাই বিপ্লবের পর অনেক মিডিয়া হাউজের মালিকরা নিজেদের স্বার্থরক্ষায় পেশাদার সাংবাদিকদের নানা কায়দায় যন্ত্রনা দিয়ে চলেছে। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় মিডিয়া হাউজগুলির মালিকরা দলীয় পরিচয়ে নিয়োগ দিচ্ছেন। বিভিন্ন অজুহাতে পেশাদার সাংবাদিকদের চাকুরিচ্যুত আবার কাউকে কাউকে অবসরে যেতে বাধ্য করছে। অতীতে যেসক পেশাদার সাংবাদিক পেশাদারিত্ব বজায় রেখে বছরের পর […]
হাবিবুর রহমান বাদল নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায় বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার ঘটনা প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে। এনিয়ে সাধারণ নাগরিকরা সরব হয়ে উঠেছেন। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে বিভিন্ন মহল থেকে তার পদত্যাগ দাবি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা […]
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট: আড়াইহাজার থানায় দায়ের করা উপজেলার দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সহসভাপতি বাবুল মিয়া হত্যা মামলা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৩ জুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল মিয়ার মৃত্যু হলেও দুই মাস পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি নিহত হয়েছেন উল্লেখ করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছেন দুপ্তারা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন। এই […]
প্রকাশক ও সম্পাদক
হাবিবুর রহমান বাদল
০১৯১১০১০৪৯০
hr.badal@yahoo.com
বার্তা ও বাণিজ্যক কার্যালয়
৬. সনাতন পাল লেন
(হোসিয়ারী ক্লাব ভবন, তৃতীয় তলা)
৭৬৪২১২১
dbartanews@gmail.com
রেজি: ডিএ নং-২০৯৯