আজ রবিবার | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৬ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | সন্ধ্যা ৭:১৩

শুধু আশ^াসের বানীই শুনেছে ফতুল্লাবাসী

ডান্ডিবার্তা | ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
ফতুল্লাবাসী বছরের পর বছর শুধু আশ^াসের বানীই শুনে এসেছে। দীর্ঘ ১৭টি বছর ফতুল্লাবাসী শামীম ওসমানের বিশাল বিশাল আশ^াস মুনতে শুনতে বিশ^াস হারিয়ে ফেলেছে। এখন তারা কার উপর ভরসা করতে তা বুঝে উঠতে পারছেন না। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি শহর ও সদর সংলগ্ন হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এই এলাকার মানুষের চাহিদা একটু বেশিই থাকার কথা। কিন্তু বেশি চাহিদা তো দূরের কথা এই আসনে নিয়মতান্ত্রিকভাবে যেসব উন্নয়ন হওয়ার কথা, সেসব উন্নয়ন থেকেও এখানকার লোকজন দীর্ঘদিন যাবত বঞ্চিত বলে তাদের আক্ষেপ। স্থানীয় এমপির উদাসীনতার কারণে এখানে বর্ষাকালে কোন প্রকার বন্যা ছাড়াই এলাকাবাসী বন্যার ভোগান্তির শিকার হন প্রতি বছর। এখানকার ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তা-ঘাটগুলোর অবস্থাও খুব শোচনীয়। এলাকাবাসীর মতে আসন্ন ত্রয়োদ্বশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নতুন সীমানায় যেহেতু সিদ্ধিরগঞ্জকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ফতুল্লা অঞ্চলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, তাই স্থানীয়দের জন্য এখনই তাদের কাছে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ এবং জনবান্ধব জনপ্রতিনিধি নির্ধারণ করার একটি বড় সুযোগ। তাই এই নির্বাচনে কার উপর ভরসা করতে পারেন এই বিষয়টি নিয়েই এখন বিচার বিশ্লেষণ ও আলোচনা সমালোচনা করছেন তারা। চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে এখানকার অলি-গলির প্রায় সকল প্রকার আড্ডায়ই এখন এই আসন থেকে কাকে নির্বাচিত করলে স্থানীয়দের চাহিদা পূরণ হবে, কে তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে অঙ্গীকারবদ্ধ, তা নিয়েই চলছে আলোচনা। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর নারায়ণগঞ্জের কর্তা ব্যক্তিদের প্রতিও তারা অনুরোধ জানান, এখানকার প্রার্থীতার বিষয়ে তারা যেন মাঠ যাচাইয়ের মাধ্যমে জনবান্ধব ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেন সে বিষয়ে দলীয় হাই কমান্ডের কাছে আহŸান জানানোর। বিভিন্ন প্রচার মাধ্যম ও মাঠ পর্যায়ে কথা বলে জানা যায়, এই আসন থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু ব্যক্তি নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কিংবা দল থেকে সমর্থন জানিয়েছেন। যার মধ্যে বিএনপি থেকে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, এডভোকেট আব্দুল বারী, এডভোকেট হুমায়ুন কবির, মশিউর রহমান রনির নাম। এদের অনেকে এরই মধ্যে দলের সমর্থন পেতে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে দলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দলীয় সমর্থন নিয়ে মাঠে কাজ করছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এর আব্দুল জাব্বার, ইসলামী আন্দোলনের মুফতি ইসমাইল সিরাজী, খেলাফত মজলিস এর মো. ইলিয়াস আহমদ এর নাম। এর বাইরেও এই মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় শোনা যাচ্ছে বিএনপির সাবেক নেতা ও শিল্পপতি শাহআলম এবং হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের নেতা মনির হোসেন কাশেমীসহ বেশ কয়েকজনের নাম। ত্রয়োদ্বশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই আসনের সীমানা পরিবর্তন হওয়ার পর নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন (আলীরটেক ইউনিয়ন, গোগনগর ইউনিয়ন, কুতুবপুর ইউনিয়ন, বক্তাবলী ইউনিয়ন, ফতুল্লা ইউনিয়ন, কাশীপুর ইউনিয়ন, এনায়েতনগর ইউনিয়ন) নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠন করা হয়েছে। তাই এই আসনটি এখন পুরোপুরি ফতুল্লা থানা কেন্দ্রীক। সিদ্ধিরগঞ্জ বাদ পড়ায় এখন ফতুল্লার সমস্যা নিয়ে যারা কাজ করবেন এবং ফতুল্লাবাসীর শুভাকাঙ্খী হতে পারবেন তাদেরকেই নির্বাচিত করতে চান ফতুল্লাবাসী। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনটি গডফাদারের আসন কিংবা জেলার প্রভাবশালী ব্যাক্তির আসন হিসেবে পরিচিত ছিল। আর সেই আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের ক্যাডার বাহিনীর রাজত্ব ছিল পুরো আসন জুড়ে। তাইতো এলাকার মানুষ যতই ভোগান্তিতে থাকুকন না কেন, তারা তাদের সে কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে হজম করতে বাধ্য হয়েছিলেন। যদি কেউ মুখ খুলতে চাইতো তাহলে ‘এলাকা উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে’ বলে বলতে হতো। আর না হলে সেই গডফাদারের দল কিংবা গডফাদার নিজে তাদের থ্রেড দিয়ে কিংবা নির্যাতনের মাধ্যমে তাদের মুখ বন্ধ করা হতো। এলাকার জলাবদ্ধতার বিষয়ে বর্ষাকাল আসলে এখানকার জনগণের ভোগান্তির চিত্র নিয়ে মিডিয়ায় লেখালেখি হলেই এমপি সাহেব নাটকীয় ঘটনার মঞ্চায়ন করে ক্যামেরা নিয়ে পানিতে নেমে যেতেন এবং বড় বড় বক্তব্য দিতেন। অথচ এই সমস্যা সমাধানে তাকে কোন প্রকার ভূমিকা রাখতেই দেখা যেতো না। কুতুবপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শাহালম মিয়া বলেন, প্রতি বছর বর্ষাকাল এলেই আতঙ্কে থাকেন ফতুল্লাবাসী। এখানে নেই কোন পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা। তাই বর্ষাকাল এলেই এখানে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, তার জন্য স্থানীয়দের ভোগান্তিতে থাকতে হয় দীর্ঘদিন ধরে। বিশেষ করে ডিএনডি প্রকল্পের ভিতরে থাকা লোকজন এই ভোগান্তির নিত্য শিকার। এখানে একদিন বৃষ্টি হলেও জনগণকে পানিবন্দী হয়ে থাকতে হয় সপ্তাহ জুড়ে। এখানকার রাস্তাঘাটগুলোর অবস্থাও শোচনীয়। আগে যিনি এখানকার প্রতিনিধি ছিলেন তিনি বা তার লোকজন এই বিষয়টি নিয়ে কোন কাজই করেনি। তাই আগামী নির্বাচনে আমরা এমন একজন প্রতিনিধি চাই, যিনি সাবেক এমপি’র মতো উদাসীন না হয়ে এখানকার সমস্যা দূর করার জন্য কাজ করবেন। ফতুল্লা ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুস সালাম বলেন, পূর্বে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করেছেন। এখানকার সমস্যা সমাধানের কোন চেষ্টা তারা করেননি। তাই এখানকার সমস্যা অনেক। তবে জলাবদ্ধতা ও চলাচল অযোগ্য রাস্তা-ঘাট এখানকার সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদে মেরামতের মাধ্যমে যেভাবে রাস্তা-ঘাটগুলো মেরামত করতে দেখেছি, আমাদের এখানে তুলনামূলকভাবে সেভাবে হয়নি। তখনকার ক্ষমতাসীন দলের সাথে সখ্যতা থাকা স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে এখানকার স্বাভাবিক উন্নয়ন কাজগুলোও ঠিকমতো হয়নি বলে তিনি অভিযোগ অভিযোগ করেন।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা