অন্তর জ¦ালায় ভুগছে আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
অন্তর জ¦ালায় ভোগছেন আওয়ামীলীগ। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু বার্ষিকী। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকাবস্থায় এ দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষনা করেছিল। আর খুব ঘটা করে এ দিনটি পালন করতেন। ১৪ আগষ্ট রাতে বিভিন্ন স্থানে মাইকের আওয়াজে মানুষ ঘুমাতে পারতনা। আর এ দিনকে কেন্দ্র করে হতো ব্যপক চাঁদাবাজি। আর এক নিমিষেই দীর্ঘ দেড় দশকের ক্ষমতার বড়াই চুরমার হয়ে গেছে। ক্ষমতার অপব্যবহার আর দুর্নীতির কারণে এখন আওয়ামীলীগের বাঘা বাঘা নেতারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যা গত মাসেও তাদের ক্ষমতার দম্বে বিএনপিসহ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি গ্রেফতার ও হামলা-মামলার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াত। আওয়ামীলীগের সুদিনে যারা আওয়ামীলীগ ব্যবহার করে লাঘব বোয়াল হয়েছেন, হয়েছেন বিশাল সম্পদের মালিক। গড়েছেন বিশাল অর্থের পাহাড়। তারা আজ আওয়ামীলীগের দুর্দিনে পাশে নেই। আক্ষেপ করে এক আওয়ামীলীগ কর্মী এমন মন্তব্য করেন। যারা এতদিন আওয়ামীলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলান মত সাহস পেতেন না এখন তারা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। দীর্ঘ দেড় দশকে নারায়ণগঞ্জে এমপিদের ছত্রছায়ায় নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জটাকে জিম্মি করে রেখেছিল। বিরোধী মতের কাউকে কথা বলার সুযোগ দেয়া হতো না। কেউ কথা বললেই তার উপর নেমে আসতো মামলার পাহাড় আর গুম হওয়ার শঙ্কা। অনেকে জীবন রক্ষার্থে কথা বরা বন্ধ করে দিয়েছে। আবার যারা কথা বলতেন তাদের বিরুদ্ধে নানা অযুহাতে মামলার শেষ নেই। এভাবে দমন পীড়ন চালিয়ে আওয়ামীলীগ ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে তারা দেশে রামরাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে আওয়ামীলীগ গ্রাস করেনি। চাকুরীর ব্যপারেও দেখা হতো দলীয় লোকদের যেখানে মেধা নয় দলীয় লোক হলে চাকুরী পেত। আবার চাকুরীর জন্য বড় নেতাকে দিতে হতো মোটা অংকে ঘুষ। আওয়ামীলীগের বড় নেতাদের কাছ থেকে ছোট নেতারাও রেহাই পায়নি। ছোট নেতাদের মাঠে নামিয়ে করাত চাঁদাবাজি আর সেই চাঁদাবাজির টাকা নিজের পকেটে ভরত। এভাবে দেশটাকে মগেরমুল্লুক বানিয়ে ফেলেছিল। আর আওয়ামীলীগের অপকর্ম যখনই কোন সংবাদ কর্মী বা সুশিল ব্যক্তি মুখ খুলেছে তাকে হয়তো জেলে যেতে হয়েছে নয়তো তাকে গুমের শিকার হতে হয়েছে। এছাড়া অনেককে জীবনও দিতে হয়েছে। যারা আওয়ামীলীগকে তেল দিয়েছে তারা পেয়ে বড় বড় পদের পুরস্কার আর গাড়ি বাড়ি। আর দলবাজ কিছু সাংবাদিকের কারণে আওয়ামীলীগ আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। আর লেবাজরা সব সময় তেল মর্দন করেই থাকেন। বিগত আওয়ামীলীগকে তেল মর্দন করেছে এখন নতুন সরকারকে তেল দিচ্ছে। তাদের চরিত্র বুঝা দায়। এই নারায়ণগঞ্জেও তেলবাজরা সব সময় সুবিধা ভোগ করে গেছেন। এখন তারা তেল দিয়ে সুবিধা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টায় আছেন। এই সকল তেলবাজ ও দলবাজ সাংবাদিকদের জন্য দেশের মানুষ সঠিক দিশা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জাতি সব সময় আশা করে সাংবাদিকরা পথের দিশা দেখাবেন। কিন্তু তেলবাজরা জাতিকে বিভ্রান্তই করে গেছেন। আজ আওয়ামীলীগ ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে আর তেলবাজরা নতুন তেল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আর যারা দলবাজ তারা গাঢাকা দিয়েছে। এদিকে গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়। আর সেই সাথে পালিয়ে যায় অনেক চতুর মন্ত্রী-এমপি। বিশ^ কখনো ছাত্র আন্দোলন বৃথা যায়না। চতুর মন্ত্রী-এমপিরা এর আঁচ বুঝতে পেরে তাদের সরকার পতনের আগেই দেশ ছেড়ে পারিয়ে গেছেন। আর যারা ক্ষমতাকে ক্ষুক্ষিগত করে রাখার জন্য সর্বশেষ চেষ্টাটুকু করেছেন তারা আটকে গেছেন। এখন তারা একে একে আটক হচ্ছে। এখন তাদের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে ছাত্র-জনতাকে গণহত্যার দায়ে। সেই সাথে বেরিয়ে আসছে তাদের দুর্নীতি আর দমনপীড়নের স্ট্রিমরোলারের কাহিনী। কিন্তু যারা সুবিধাভোগী তারা পালালেও যারা তৃনমূল পর্যায়ে আছে তারা পালাতে পারেনি। তারা এখন অন্তর জ¦ালায় ভোগছেন। এতদিন যে ১৫ আগষ্ট তারা করেছেন এবার তা করতে পারলেন না। এ কারণে তারা ধুকে ধুকে জ¦লতে শুরু করেছে। তাই ক্ষমতা যেমন চিরদিন থাকেনা আর অন্যায় কখনো চাপা থাকেনা। ান্যায়ের বোঝা ভারি হয়েে গেলে তা উপচে পড়বেই। আর এখন আওয়ামীলীগের এ দশা থেকে শিক্ষা নিয়ে ান্যান্য দলগুলিকে আগামী দিনের পথ চলতে হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল।