এখনো ট্রমা কাটেনি পুলিশের

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে থানাগুলির কার্যক্রম শুরু হলেও পুলিশ এখনো ট্রমা থেকে বের হতে পারেনি। এখন শুধু জিডি আর অভিযোগ নেয়া হলেও মামলা নেয়া শুরু হয়নি। সার্ভার সমস্যার কারনে এখনও মামলা নেয়া শুরু হয়নি। এখনো থানা গুলি সেনাবাহিনী পাহাড়া দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষ বর্তমান পরিস্থিতিতে পুলিশের চাইতে সেনাবাহিনীর উপর বেশী আস্থাশীল দেখা যাচ্ছে। গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামীলীগ সরকারের পতন ঘটে। এদিন ছাত্র-জনতা বিজয় উল্লাস করলেও কিছু অতিউৎসাহী ও দীর্ঘ দেড় দশকে নির্যাতনের শিকার হওয়া মানুষগুলি প্রতিশোধ নিতে আওয়ামীলীগ নেতাদের বাড়িঘর ও স্থাপনা সেই সাথে প্রচন্ড ক্ষোভে থানাসহ পুলিশের স্থাপনায় হামলা,ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। হামলায় নিহত হয় অনেক পুলিশ। সে থেকে পুলিশ আতঙ্কি হয়ে পড়ে। তারা ট্রমায় চলে যায়। আর পুলিশের উপর হামলার বিষয়ে বিভিন্ন জনে বিভিন্ন কথা বলছেন। অনেকে বলছেন, পুলিশ আওয়ামীলীগ সরকারের পেটুয়া বাহিনী হয়ে এত নির্যাতন করেছে যার কোন হিসাব নেই। কোন ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু পুলিশ একটি ঘটনা উল্লেখ করে গায়েবী মামলা দিয়ে আওয়ামী সরকারের বিরোধীমতকে দমাতে মিথ্যা মামলা ও হয়রানি করেছে। শুধু তাই নয় এ সরকার পতনের ৩/৪দিন আগেও দেশে যখন আন্দোলন জোরদার তখনও পুলিশ বিভিন্ন বিএনপি নেতাদের ধরে এনে মামলার ভয় দেখিয়ে গ্রেফতার বানিজ্যে মেতে উঠেছিল। অনেকে নিরুপায় হয়ে পুলিশকে টাকা দিতে হয়েছে। বন্দরের এক ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা বলেন, আমার রড এর দোকান আন্দোলন চলাকালে সরকার পতনের আগে পুলিশের সহায়তায় আওয়ামীলীগ ক্যাডার খান মাসুদ ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বন্দর ইউনিয়নের এক প্রবীন বিএনপি নেতা বলেন, পুলিশ তার কাছ থেকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এভাবে বিএনপির বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা বানিজ্য করেছে এ আন্দোলনের সময়। আর দীর্ঘ দেড় দশকে পুলিশ সরকার বিরোধী আন্দোলন খুব কঠোর ভাবে দমন করেছে। হামলা-মামলা দিয়ে বিরোধী দলগুলিকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয় বিগত ৩টি নির্বাচনে পুলিশ আওয়ামলীগের কর্মীর মত কাজ করেছে। পুলিশকে কৌতুহল করে বলতে শুনা গেছে আওয়ামীলীগের ক্ষমতায় ধরে রেখেছে পুলিশ। পুলিশের দমন পীড়নের কারণে আওয়ামীলীগ বার বার ক্ষমতায় এসেছে। আওয়ামলীগের জনসমর্তন না থাকলেও পুলিশ আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় রাখতে যা করা দরকার তাই করেছে। আর এ কারণে বিরোধী দলগুলি সব সময় পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত ছিল। যার বর্হিপ্রকাশ ঘটেছে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর। আর পুলিশ হত্যার স্বীকার হওয়ার জন্য পুলিশই দায়ি। রংপুরে পুলিশ নিরস্ত্র ছাত্র আবু সাঈদকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্রার পর ছাতা-জন্তা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। আর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সুযোগে ভ’ক্তভোগীসহ এক শ্রেনীর অতিউৎসাহীরা পুলিশ হত্যার মত জঘন্য কাজ করেছে। সাধারণ মানুষ পরিচ্ছন্ন পুলিশ চায়। এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা এখনো ট্রমায় আছি। আমাদের পুলিশকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা একটি সভ্য সমাজে হতে পারেনা। আমাদের যারা ব্যবহার করেছে সেই সকল কর্মকর্তা ও সরকারের বিচার চাই। আমরা হুকুমের শিকার ছিলাম। আমরা জনগণের হয়ে কাজ করতে চাই। বর্তমান সরকার যেন আমাদের সেই পরিবেশ সৃষ্টি করে দেন। আন্দোলনের সময় গ্রেফতার বানিজ্যের বিষয়ে জানতে চাইল ওসি বলেন, এখন আমরা মহা বিপদে আছি এখন কাটা গায়ে নুনের ছিটা দিয়ে না। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই। আমাদের বৈষম্য দুর করতে হবে। আমরা দেশে শান্তি চাই। জনগনের জানমালে নিরাপত্তায় কাজ করতে চাই।