আজ সোমবার | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ | ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | রাত ৯:১০

বিএনপির জন্য অশনি সংকেত!

ডান্ডিবার্তা | ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বিএনপি নেতারা এতদিন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেভাবে ঘর গুছাচ্ছিল তাতে তাদের জন্য তেমন সুবিধা বয়ে আনতে পারছে না। কারণ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইসলামী দলগুলি আগে থেকেই ঘর গুছাতে শুরু করে দিয়ে ছিল। সেদিকে এখনো বিএনপি অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। ইসলামী দলগুলি মাঠে নামলেও বিএনপিকে তেমন একটা মাঠে দেখা যাচ্ছে না। বিএনপি নেতাদের মধ্যে একটি ধারণ ছিল বিএনপি এতবড় দল তাকে হারানো অসম্ভব। এ ধারনায় বিএনপির নির্বাচনী তৎপরতা তেমন একটা দেখা যায়। বিএনপির মধ্যে আছে শুধু দলাদলি আর কাঁদা ছুড়াছুড়ি। আর বিএনপির কতিপয় নেতা মনে করতেন তারা নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় বসে গেছে। কিছু পাতি নেতার আচরনে তেমনটাই মনে হত। তাদের এ ধরনায় পানি ঢেলে দিয়েছে ডাকসু নির্বাচন। দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীদের ভূমিধস পরাজয় হয়েছে। নিজ দলের এমন পরাজয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করেছেন অনেক বিএনপি নেতা। সেই সকল নেতাদের উদ্দেশ্য করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। গত বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপু নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্টে লিখেছেন, ডাকসুর নির্বাচনে যারা নিজের দলের ছাত্রসংগঠনের পরাজয়ে খুশি হয় ও ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়, অত্যন্ত তাদের দল করা উচিত নয়। যে জামাত-শিবির ফ্যাসিস্ট হাসিনার চরিত্রে চরিত্রবান, তাঁদের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং আওয়ামী লীগ থেকে শিক্ষা নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকে হঠাৎ করে শিবির বানিয়ে তাকে ডাকসুর নির্বাচনে শিবিরের প্রার্থী করা এটা কি দেউলিয়াত্বের প্রমাণ না? আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের রসুনের গোড়া একখানেই এবং পাশ্ববর্তী একটি দেশের মুরিদ। যাদের চক্রান্তে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবির একাকার হয়ে রাজাকারের উত্তরসূরী অপদার্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান নিলর্জ্জ ভিসি প্রহসনের নির্বাচন ও কারচুপি ফলাফলের মাধ্যমে এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ছাত্র সংগঠনের পক্ষে ফলাফল এনে দেওয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সাথে বেঈমানি করা একই কথা। ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে যারা স্বাধীনতার বিরোধীদের হাতে তুলে দিতে পারে, তারা একদিন বাংলাদেশ নামক দেশকে অন্য দেশের হাতে তুলে দিতে দ্বিধাবোধ করবে না। অতীতে ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা যেভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব পাশ্ববর্তী দেশের হাতে তুলে দিতে দ্বিধাবোধ করে নাই, তেমনি ফ্যাসিস্টের যোগ্য উত্তরসূরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবিরও আমাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আমাদের দেশের পার্শ্ববর্তী আরেকটি দেশের কাছে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে একটুও দ্বিধাবোধ করবে না। আওয়ামী লীগ ও জামায়াত শিবিরের আদর্শ একই, কারণ তারা ভাত খায় বাংলাদেশের, গুন-গান গায় অন্য দেশের। অতএব যারা অন্য দেশের দালাল ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল দেখে আনন্দিত ও উল্লাসিত হয়, অত্যন্ত তারা শহীদ জিয়ার সৈনিক ও বিএনপি এবং বিএনপি’র সৈনিক দাবি করা বেমানান। জামায়াত শিবির লজ্জিত হও, কারণ তোমরা আওয়ামী লীগের ও ফ্যাসিস্টের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়েছো। এদেশের স্বাধীনতাকামী ছাত্র ও জনতা, দেশের স্বাধীনতার সাথে বেঈমানি করা ও বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত, খুন ও গুম হওয়া বিএনপি সহ ২০ দল ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ছাত্র, শ্রমিক ও জনতার রক্তের সাথে বেঈমানি করা একই কথা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রিয় ছাত্র ও জনতা তোমাদের ছাড়বে না এবং ডাকসুতে আওয়ামী লীগের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ডাকসুর ফলাফল চুরির জন্য এদেশের ছাত্র ও জনতা তোমাদেরকে একদিন উচিত শিক্ষা দিতে পিছ পা হবে না, যেমনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে দেওয়া হয়েছে। শুধু সময়ের ব্যাপার ও অপেক্ষা। সাধু সাবধান। এদিকে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন না হলে অন্তর্বতী সরকারের অর্জন বলতে কিছুই থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। এ সময় তিনি আরও বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করাই জাতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে, আমি মনে করি, নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হলেও নিজেদের মধ্যে গণতন্ত্রে প্রক্রিয়ায় উত্তরণের বিষয়ে হয়তো বা এখনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, সময় আছে, আশা করি এর ভেতরে আমরা আলোচনার করে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষমতা রাখে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় গেলে পরে সংশোধিত সংবিধান আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে। শতাধিক সংস্কারের প্রস্তাব রয়েছে, সব দল হয়তো বা সব বিষয়ে একমত হতে পারবে না জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেছেন, পতিত সরকারের দোসরদের কারণে ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের ভরাডুবি হয়েছে। এই নির্বাচন বিএনপিকে একটি সতর্ক সংকেত দিয়েছে। সেলিমা রহমান বলেন, আপনারা দেখেছেন ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দোসরদের সাথে মিলে আরেকটি রাজনৈতিক দল কীভাবে খেলা খেললো। এগুলো আপনাদের বুঝতে হবে, জানতে হবে এবং এখন থেকে কাজ করতে হবে। সেলিমা রহমান আরও বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে, এই নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, এখন থেকে আপনারা প্রতিটি ঘরে ঘরে আপনারা যাবেন, আপনাদের দায়িত্ব কে নমিনেশন পাচ্ছে, তা বড় কথা নয় কিন্তু ধানের শীষ যেন ভোট পায়। তিনি বলেন, আজকে সমাজ নষ্ট হয়ে গেছে, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ নাই, অশালীন ভাষায় বাচ্চারা গালাগাল করছে, ছাত্ররা গালাগাল করছে, শিক্ষকের সম্মান নাই, মায়ের সম্মান নাই, বাবার সম্মান নাই, তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে আপনাদের মাঝখান দিয়ে। আজকে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে, দুই একটি রাজনৈতিক দল তারা ভোটের মাধ্যমে আসতে চাচ্ছে না। বিএনপির আন্দোলন-সংগ্রামের প্রধান লক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনও অর্জিত হয়নি। তাই নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থেকে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের সতর্ক থেকে তাদের প্রতিহত করতে হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা