আজ বৃহস্পতিবার | ১৬ অক্টোবর ২০২৫ | ৩১ আশ্বিন ১৪৩২ | ২৩ রবিউস সানি ১৪৪৭ | সকাল ১১:৩৪

না’গঞ্জে বাকযুদ্ধে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা

ডান্ডিবার্তা | ১২ অক্টোবর, ২০২৫ | ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে চলছে বাকযুদ্ধ। কোন কোন প্রার্থী বলে বেড়াচ্ছেন তারা অঘোষিত সবুজ সংকেত পেয়ে মাঠে নেমেছেন। এক সাথে কতজন সবুজ সংকেত পেয়েছেন তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। শহরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারনায় মুগ্ধ হয়ে পড়েছেন। আর এর মধ্যে চলছে প্রার্থীদের মধ্যে বাকযুদ্ধ। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে অনৈক্য তা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যা এর প্রভাব পড়বে আগামী নির্বাচনে। এই নেতাদের অনৈক্যের খেসারত দিতে হবে দলকে। এমনই মতামত ব্যক্ত করেছেন বিএনপির তৃনমূল নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জে সবচেয়ে বেশী বাকযুদ্ধ চলছে সদর-বন্দর আসন নিয়ে। নির্বাচনী মাঠে সরব রয়েছেন দুই শিল্পপতি। তারা বিএনপির নামে বিভিন্ন কর্মসূচি করে যাচ্ছেন। আর অপরদিকে বিএনপির শীর্ষ নেতারা এটাকে ভাল চোখে দেখেনি। তারা মেতে উঠেছেন বাকযুদ্ধে। আর এতে করে বিএনপির বিভিন্ন নেতাকর্মীরা ছুটছে একেক প্রার্থীর পিছনে। দলে নেই কোন ঐক্য। দলের শীর্ষ নেতারা দলের ভিতরে ঐক্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিএনপি দীর্ঘ ১৬ বছর পরে রাজনীতিতে স্বস্তি ফিরে পেলেও নির্বাচন নিয়ে আবার অস্বস্তিতে পড়েছে। বর্তমানে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে কোন ধরনের প্রশাসনিক কিংবা রাজনৈতিক দল কর্তৃক বাধা পোহাতে হচ্ছে না। যদিও ৫ আগষ্টে আওয়ামী লীগের পতনের আগে বিএনপি নেতাকর্মীদের দলীয় কর্মসূচি ওলিতে গলিতে অল্প কিছু সংখ্যক লোক নিয়ে করতে হয়েছে। কিন্তু ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সদর-বন্দর আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থীরা মনোনয়ন লড়াইয়ে নেমেছে। এদিকে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একে অপরকে ঘায়েল করতে নিজেদের মাঝে কথার লড়াই শুরু করে দিয়েছেন। বিএনপির সুসময়েও নিজেদের মাঝে ঐক্যের ঘাটতি রয়েছে বলে মনে করেন তৃনমূল নেতাকর্মীরা। এদিকে তার মাঝে কথার লড়াইয়ে একে অপরকে ঘায়েল করতে নাম না নিয়ে নানা মন্তব্য করে নিজেদের মাঝে কোন্দলের বিষয়টিও প্রকাশ্যে আনছেন। আর এতে করে শীর্ষ নেতারাও আলোচনা সমালোচনায় জড়িয়ে পড়ছেন। অন্তর্কোন্দল বেড়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে আধিপত্য বিস্তার, বিসিক ও আদমজী ইপিজেডে ব্যবসা, বিভিন্ন পোশাক কারখানার ঝুট ব্যবসাসহ নানা ইস্যুতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বেড়েছে এ কোন্দল। ফলে নিজেদের মধ্যে ঘটছে সংঘর্ষের ঘটনাও। এতে হতাশ সাধারণ নেতাকর্মীসহ দলের তৃনমুল। অথচ রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত সাড়ে ১৭ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি ছিল। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা মামলা-হামলায় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েন। অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এমনকি শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে কর্মীরাও ঘরে থাকতে পারেন নাই। এরই জেরে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জনরোষে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নিপীড়িত নেতাকর্মীরা তাদের সাড়ে ১৭ বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবং এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখতে বিভিন্ন এলাকায় মহড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পকারখানায় নিজেদের অবস্থান জানান দিতে থাকেন। এ কারণে নিজেদের মধ্যে ঘটে অন্তর্কোন্দল। যা একপর্যায়ে রূপ নেয় হামলা-মামলায়। অপরদিকে মাসুদুজ্জামানকে উদ্দেশ্য করে মহানগর বিএনপির আহŸায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, আমাদের বিএনপিতে একজন শিল্পপতি ২০ টাকা দিয়ে নতুন সদস্য ফরম পূরণ করেছেন, সারা বাংলাদেশে এমন ৫ কোটি লোক এমন নতুন সদস্য ফ্রম ক্রয় করবেন। কিন্তু গত ২২ তারিখে সেই শিল্পপতি সদস্য হয়ে নারায়ণগঞ্জের মালিক বনে গিয়েছেন। যারা দলের জন্য মাসের পর মাস জেল খেটেছে, আওয়ামী লীগের নির্যাতনসহ শত শত মামলা খেয়ে ঘর ছাড়া হয়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে, গত ১৫ বছর মিছিল মিটিংয়ে আওয়ামী লীগের নির্যাতন সহ্য করে উপস্থিত ছিলো। সে এসেই নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলবেন এটা কিন্তু মানুষ ভালো চোখে দেখবে না। আমরা আপনার উপরে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম আপনি যদি সহযোগীতার হাতকে দুর্বলতা মনে করেন, তাহলে সেটার দায় দায়িত্ব আপনাকে বহন করতে হবে। দলের চেইন অব কমান্ড মেনে চলুন। তা না হলে আপনার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু নতুন সদস্য মডেল মাসুদকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে যারা নতুন এসেছেন, বিশেষ করে কয়েকজন শিল্পপতি, তারা যেন দলের গঠনতন্ত্র ও চেইন অব কমান্ড মেনে কাজ করেন। কিন্তু মাত্র কয়েকদিন আগে যোগদান করেই আপনি দলের ব্যানার ব্যবহার করে পাল্টা কাজ করছেন। আপনার আশপাশে রয়েছেন ওসমান পরিবারের দোসররা, যারা দল থেকে বহিষ্কৃত। আন্দোলন-সংগ্রামে যাদের কোনো ভূমিকা ছিল না, বরং তারা কর্মীদের ভয় দেখাতেন। দলে বিভক্তি করবেন না। অথচ বিভক্তি তো আপনিই করছেন। আপনাকে এ দায়িত্ব কে দিয়েছে? তারেক রহমান কি দিয়েছেন? দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার কথা থাকলেও আপনি তা করেননি। আপনি যদি চেইন অব কমান্ড ভেঙে দলকে বিভক্ত করার চেষ্টা করেন তা মেনে নেয়া হবে না। আমরা তিল তিল করে এই দলকে দাঁড় করিয়েছি। একে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করার সাহস দেখাবেন না। অন্যদিকে সদর-বন্দর আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রের সাথে বিএনপির নেতা জড়িত রয়েছে। বিএনপিতে সদ্যযোগদানকারী এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, তাঁকে মনোনয়নের দৌড় থেকে দূরে রাখতে এবং দলের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিএনপির ‘ঐতিহ্যবাহী একটি পরিবার’ এই জঘন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তবে তিনি কাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যপক আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কথার লড়াইয়ের মাঝেও বিএনপি থেকে যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তাকে জয়ী করার সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে মনে করেন তৃনমূল নেতাকর্মীরা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা