রাজপথ দখলের পরিকল্পনা বিএনপির!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট চলমান নানা ইস্যুতে কেন্দ্রঘোষিত একের পর এক কর্মসূচি পালন করছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন গুলো। মামলা মোকদ্দমায় ঝিমিয়ে পড়া নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা অবশেষে জেগে উঠেছে। প্রতিটি কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের স্বতস্ফুর্তভাবে অংশগ্রহণ করছে। আর এতে করে চলমান নানা ইস্যুতে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ বিএনপি’র দখলে এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, দীর্ঘদিন নিশ্চুপ থাকার পর নানা ইস্যু নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠণগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। অনুষ্ঠিত হয়ে যাওয়া দ্বাদশ নির্বাচন বাতিল, জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, গণপরিবহনের ভাড়া ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং পুলিশ এবং ক্ষমতাসীনদলের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে রাজপথে নেমেছে তারা। এছাড়াও বিএনপি বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তত্ত¡াবধায়ক সরকার, সংসদকে বিলুপ্ত, সরকারকে পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে দলটি। এসব কর্মসূচী গুলো পুলিশি বাধাকেও উপেক্ষা করে স্বতস্ফুর্তভাবে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শহর ও শহরের বাইরে রাজপথ দখল করে চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি গুলো পালন করছে। অবশেষে সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘুরে দাাঁড়ানোর চেষ্টা করছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। জানাগেছে, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি রাজনৈতিক ভাবে দীর্ঘ দিন রাজপথে নামতে পারেনি। মামলায় মোকদ্দমায় তারা প্রায় নাস্তানাবুদ হয়ে পড়েছে দলের নেতাকর্মীরা। সেই সাথে তারা নিজেদের মধ্যে গ্রæপিং ও কোন্দলের কারনে অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল। তবে চলতি বছরে তারা রাজনৈতিক ভাবে ফের ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ঝিমিয়ে পড়া নেতাকর্মীরা ফের চাঙ্গা হতে শুরু করে। বর্তমানে তারা সারাও পাচ্ছে। বিগত সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় দাঁড়াতে পারেনি। পুলিশ তাদের রাস্তায় নামতেই দেয়নি। নিরুপায় হয়ে তারা বিভিন্ন গলিতে গিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য দাঁড়িয়ে রাজনীতির চর্চা করতেন। সব সময় তাদের মধ্যে পুলিশী আতঙ্ক বিরাজ করত। গত ১এক যুগে অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা ও জেল খেটেছে। এখনও তাদের প্রতিদিন নারায়ণগগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা আদালতের বারান্দায় ঘুরতে হচ্ছে বিভিন্ন মামলা নিয়ে। তার পরেও হাল ছেড়ে দেয়নি বিএনপি। বছর জুড়েই তারা কোন না কোন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথ ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর আগামী নির্বাচনে বিএনপির মতে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরী হলে তারা নির্বাচনে অংশ নিবেন। সেজন্য তারা প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিএনপির প্রতিটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে ও চাষাঢ়া শহীদ মিনার পালন করছে তারা। নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি ঢাকার কর্মসূচি গুলোতেও দেখা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে। ফলে প্রতিটি কর্মসূচিতেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা দলে দলে অংশ গ্রহণ করছেন। এমনকি হামলার মামলার ভয়কে উপেক্ষা করে স¤প্রতি ঢাকার মহা সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে একাধিক প্রস্তুতি সভার মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্বের জাগান দিয়েছে দলটি। এর ফলে অতীতের চেয়ে আরও বেশী রাজপথে দেখা যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাদের মধ্যে কমিটিসহ নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের বিরোধ থাকলেও এবার তারা বিরোধ মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আগামীতে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়ে রাজনীতির নয়া পরিবেশ তৈরী করতে যাচ্ছেন এমনটাই ভাবাস পাওয়া যাচ্ছে বিএনপির একাধিক নেতার কাছ থেকে। যদিও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহŸায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে একটি গ্রæপ আলাদাভাবে কর্মসূচি পালন করছে। তারা মুখে মুখে বলে পদত্যাগ করছি বলে কিন্তু কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি গুলোও ঠিকই আলাদা ব্যানারে পালন করছে । এদিকে জেলা বিএনপির কমিটি গঠন করা হলেও এ কমিটির বিরুদ্ধে এখনো দলীয় কোন্দল কিংবা বিদ্রোহ দেখা যায়নি। বিএনপি নেতারা মনে করেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি বর্তমানে আগের চেয়েও আরও শক্তিশালী। তারা আগামী দিনের সংগ্রাম যাতে সফল করতে পারে এবং সকল বাধা মোকাবেলা করতে পারে সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে। এবার যত বাধাই আসুক তারা আর পিছু হটবে না। তারা রাজনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাবে। নারায়ণগঞ্জ বিএনপি এবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম রাজপথে পালন করবে এমনটাই জানাগেছে নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে।