আজ মঙ্গলবার | ২৬ আগস্ট ২০২৫ | ১১ ভাদ্র ১৪৩২ | ২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ | দুপুর ১২:১৮

ছদ্মবেশে সক্রিয় আওয়ামী দোসররা

ডান্ডিবার্তা | ২৬ আগস্ট, ২০২৫ | ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে আওয়ামী দোসর ও সন্ত্রাসীরা। তারা সুযোগ পেলেই সৃষ্টি করছে অস্থিরতা। তারা এখন নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে জড়ো হচ্ছে রাজধানীতে। বিভিন্ন ছদ্মবেশে তারা সংগঠিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজধানীতে মিছিল করতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের ৩জন আওয়ামী দোসর গ্রেফতার হয়েছে। তারা নারায়ণগঞ্জের চিহিৃত আওয়ামী সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। গ্রেফতারকৃতরা হলো মো. শাকিল, মো. রাজু ও মো. সাঈদ। এ আটক তিনজনের বাড়িই নারায়ণগঞ্জের বন্দর ও ফতুল্লায়। গত বিকেলে ভাসানী হকি স্টেডিয়াম এলাকায় নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী ছদ্মবেশে অবস্থান নেয়। পরে তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে স্লোগান দিয়ে মিছিল করার চেষ্টা করে। এ সময় উপস্থিত জনতা ও টহলরত পুলিশ একযোগে ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় তিনজনকে পুলিশ হাতেনাতে আটক করতে সক্ষম হয়। মতিঝিল জোনের এডিসি মো. রেজওয়ান বলেন, প্রাথমিকভাবে যতটুকু জানা গেছে, ২০ থেকে ২৫ জন লোক নারায়ণগঞ্জ থেকে হকি স্টেডিয়াম এলাকায় জড়ো হয়। সেখানে অবস্থান নিয়ে তারা ছদ্মবেশ ধারণ করে ‘ইউনুস হটাও, দেশ বাঁচাও’ এ রকম স্লোগান দিতে থাকে। মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করে তারা অন্য সংগঠনের লোকজন। এ বিষয়ে বিএনপি নেতারা বলছেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ পতিত আওয়ামী লীগ এখনো দেশ, গণতন্ত্র ও বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। সুযোগ পেলেই আওয়ামী লীগ ছোবল দেবে। দেশ হাসিনা-মুক্ত ও কিছু নেতা পালিয়ে গেলেও এখনো তাদের দোসররা দেশে সক্রিয় রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। বিগত ফ্যাসিস্ট জুলুম সরকার আমাদের নেত্রীর ওপর অমানবিক অন্যায় আচরণ করেছে। বিনা কারণে তাঁকে মাসের পর মাস কারারুদ্ধ করে রেখেছিল। এ ঘটনার পর থেকে পুলিশ প্রশাসন সোচ্চার হয়ে উঠেছে। তাই পুলিশ আওয়ামী দোসরদের গ্রেফতারে শাড়াশি অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপরদিকে সিদ্ধিরগঞ্জে এখনো সক্রিয় বৈষম্য বিরোধী হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আওয়ামী দোসর শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু ও শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। এখনো প্রভাব খাটিয়ে পদ্মা পেট্রোলিয়াম লি: ডিপোতে তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। তারা উভয়ই নারায়ণগঞ্জের গডফাদার একাধিক হত্যা মামলার আসামি শামীম ওসমানের অনুসারী। সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক ও নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর রাজাকারপুত্র মতিউর রহমান মতির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত তেল চোর আশরাফের মামা শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু ও মামাতো ভাই আওয়ামী দোসর শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন একদিকে ওসমানীয় দোসর আশরাফ যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতির শেল্টারে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতেন। এদিকে মামাতো ভাই আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগ নেতা শেখ পারভেজ হোসেন জিতু ও ফুফাতো ভাই আওয়ামী লীগ নেতা তেল চোর আশরাফ মিলে নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত দুটি তেলের ডিপোর নিয়ন্ত্রণ ছিলো তাদের হাতে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই হত্যা ও হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে। হত্যা মামলায় রাজধানীর বসুন্ধরা বাড়িধারা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন ওসমানীয় দোসর যুবলীগ নেতা মতিউর রহমান মতি। তবে আশরাফ ও জিতু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে এই পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণ নিতে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলু নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের কমিউনিটি পুলিশিং এর সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেন। তার ছেলে শেখ পারভেজ হোসেন জিতু ছিলেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের অন্যতম সদস্য। আওয়ামী লীগের আমলে পিতা পুত্র দুই দোসর মিলে তেলের এই ডিপো থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। নাসিক ৬ নং ওয়ার্ডের বার্মাশীল এলাকায় পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপোর পাশেই বহুতল ভবনের একটি ডুপ্লিক্স বাড়ি রয়েছে তাদের। স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে আওয়ামী এই দুই দোসর মিলে একাই নিয়ন্ত্রণ করতেন পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড নামক তেলের ডিপোটি। পদ্মা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় তেল চুরি করে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন তারা। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা পলাতক থাকলেও এই দুই আওয়ামী দোসর নিজ বাসস্থানে আত্মগোপন করে এখনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিএনপি নেতা জানান, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্তায় তারা বাপ ছেলে মিলে পুরো ডিপো নিয়ন্ত্রণ করতো। এই ডিপো থেকে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। তারা দুজনেই হত্যা ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা থাকার পরও নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কিছু বিএনপির নামধারী নেতার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেছেন তারা। এখনো পূর্বের মতো এই তেলের ডিপো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বাপ ছেলে। তাদেরকে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। অভিযোগ উঠেছে, আওয়ামী লীগের এই দুই দোসরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরা। আওয়ামী লীগের দোসর শেখ দেলোয়ার হোসেন দেলুর কথা ছাড়া কোনো তেলের গাড়ি বের হতে পারেনি ডিপো থেকে। তার সম্মানি বাবদ প্রতিটি গাড়ি প্রতি গুনতে হতো ৪-৫ হাজার টাকা। এই টাকা না দিলে তেলের গাড়িতে তেলও লোড হতো না বলে জানা গেছে। তার ছেলে শেখ পারভেজ হোসেন জিতু আওয়ামী লীগের আরেক দোসর হিসেবে পরিচিত। একজন নামকরা মাদকের ডিলার ছিলো শেখ পারভেজ হোসেন জিতু। তার এই মাদক ব্যবসার পথ সুবিধা করতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভাগিয়ে নেন আদমজী আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সদস্য পদ। সদস্য পদ ভাগিয়ে নেওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন ওসমানী এই দোসর। ওসমান পরিবারের সাথে ছিলো তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আওয়ামী লীগের দোসর শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমানের সাথেও জিতুর সুসম্পর্ক ছিলো বলে জানা গেছে। তাই এই ওসমানীয় দোসরদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান স্থানীয়রা।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা