আত্মগোপনেও শক্তিশালী বিএনপি!
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট মাত্র কয়েকমাস বাকি রয়েছে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের। আর নির্বাচনকে ঘিরে তৎপর হয়ে উঠেছে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। দীর্ঘদীনের ঘরবন্দী রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে দলের নেতৃবৃন্দ। সম্প্রতি ক্ষমতাসীনদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী দিয়ে আলোচনায় এসেছে নারায়নগঞ্জ বিএনপি। এদিকে, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে বিএনপি। নানা চড়াই উৎরাইয়ের মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কর্মসূচির পালনের পাশাপাশি তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। আর এই জন্য তাদের হামলা, মামলা, হয়রানী ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এরমধ্যে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ ও আভ্যন্তরিণ কোন্দল নেতাকর্মীদের বিভক্ত করে রেখেছে। ফলে ঐক্যবব্ধ রাজনীতি থেকে অনেকটা পিছিয়ে যায় তারা। তাই সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামকে বেগমান করতে হলে বিএনপির শীর্ষনেতাদের এক মঞ্চে আসা জরুরী বলে মনে করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। কিন্তু বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে। কে শোনে কার কথা। কে তাদের এক মঞ্চে নিয়ে আসবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে। গত শনিবার কেন্দ্রের ১ দফা আন্দোলনের কর্মসূচীর অংশহিসেবে সমাবেশ করেছেন জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। আর এর নেপথ্যে কঠোর ভুমিকা পালন করেছেন কেন্দ্র। কেন্দ্রের চাপে জেলার ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। সূত্রমতে, গত বছর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে ১ দফা দাবি আদায়ে রাজপথে থাকার নির্দেশনা আসে দলের পক্ষ থেকে। এরপর থেকে কেন্দ্রের নির্দেশনা পালনে একের পর কর্মসূচী পালন করে আসছে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। অব্যাহত কর্মসূচী পালনের মধ্যদিয়ে রাজণৈতিক ভাবে লাইম লাইটে চলে আসেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের সাথে টেক্কা দিয়ে রাজপথে সমাবেশের মাধ্যমে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার পাশাপাশি ঐক্যবদ্ধ বিএনপিকে দেখতে পেয়েছে নারায়ণগঞ্জের মানুষ। এসময় কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালনে রাজপথে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে দেখা গেছে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ আসনের সাবেক বিএনপির এমপি গিয়াস উদ্দিন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, যুগ্ন আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, মনিরুল ইসালাম, সদস্য সচিব খোকন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ কান টিপুসহ একাধিক নেতৃবৃদকে। অতীতের আন্দোলনগুলোতে তাদেরকে একসাথে দেখা যায়নি। এই নেতাদের মধ্যে নানা মতপ্রার্থক ও আভ্যন্তরিন বিরোধ ছিল চোখে পড়ার মতো। যারফলে দলের সাংগঠনিক ভীত নড়বড়ে হয়ে পড়ে। তবে, সম্প্রতি তাদের একসাথে রাজপথে দেখতে পেয়ে তৃনমূল বিএনপির নেতৃবৃন্দের মাঝে স্বস্তিফিরে আসবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। এদিকে শীর্ষ নেতাদের ঐক্যবদ্ধ দেখে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে তোলে। যার প্রভাব পড়বে আগামীদিনের আন্দোলন সংগ্রামে। কারণ এতোদিন ধরে তারা দেখে এসেছে গিয়াস উদ্দিন ও মামুন মাহমুদের মধ্যে বিরোধ। আবার নজরুল ইসলাম আজাদের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি কাজী মনিরুজ্জামান ও মোস্তাফিজুর রহমান ভুইয়া দিপুকে। আবার গিয়াস উদ্দিনের অনুষ্ঠানে দেখা যায়নি মনিরুল ইসলাম রবি, মামুন মাহমুদকে। মোটকথা এই নেতাদের গিয়ে জেলা বিএনপির নেতাকর্মী দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। অনেক পরে হলেও এই শীর্ষ নেতাদের এক সাথে দেখতে পেরে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সরকার বিরোধী আন্দোলনে নতুন বার্ত দিবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। দলীয় সূত্রমতে, আগামী জাতীয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দল গোছাচ্ছে বিএনপি। পাশাপাশি সরকার বিরোধী আন্দোলনে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপির চলমান কর্মসূচির অংশ হিসাবে সারাদেশের প্রতিটি বিভাগে গণসমাবেশ করছে দলটি। দ্বাদশ নির্বাচনের আগ-মুহুর্তে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পালন ও আন্দোলন কর্মসূচী সফল করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের বিএনপির শীর্ষ নেতাদের তিনি এক মঞ্চে উঠার নির্দেশ দিয়েছেন।