আজ সোমবার | ১১ আগস্ট ২০২৫ | ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭ | রাত ৮:৪২

রাজাকারের পকেটে নব্য আ’লীগ

ডান্ডিবার্তা | ৩০ মার্চ, ২০২৪ | ১১:৫২ পূর্বাহ্ণ

ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট বন্দরে আওয়ামীলীগের মধ্যে রাজাকার ইস্যু নিয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। নব্য আওয়ামীলীগ ও থানা আওয়ামীলীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করার জন্য নয়া মিশন নিয়ে আওয়ামীলীগের কিছু হাইব্রিড ও বির্তকিত নেতাদের নিজেদের পকেটে নিয়ে নয়া কৌশল করে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা নিয়ে বন্দরে আওয়ামীলীগের মধ্যে দেখা দিয়ে চরম দ্বন্দ্ব। গতকাল শুক্রবারও রাজাকার পরিবারের মিশন বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামীলীগের এক অভিমানী নেতা নিজ দলের নেতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে। এছাড়াও ভিডিও বার্তা নানা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনা আরো চরম আকার ধারন করেছে। যে কোন সময় এ বিরোধ সংঘাতে রূপ নিতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কুড়িপাড়ার এক আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, নাসিক ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম একজন পোড়খাওয়া আওয়ামীলীগার। তিনি যখন কাউন্সিলর নির্বাচন করেন তখন তিনি নিজ দলের নেতাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাননি। তিনি বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ ও তার ভাই সাবেক কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনুর কাছে বার বার সহযোগিতা চেয়েও পারনি। কিন্তু ২০১৪ সালে এমএ রশিদ যখন উপজেলা নির্বাচিন করেন তখন বর্তমান কাউন্সিলর সিরাজ তার পক্ষে কাজ করেছে। আর যখন সিরাজ নির্বাচন করেন তখন এমএ রশিদ তার কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এমএ রশিদ ২০১৪ সালে যখন নির্বাচন করেছে তখন রাজাকার পুত্র মাকসুদের সহযোগিতা নিয়েছে। এখন আওয়ামীলীগের সভা সমাবেশে রাজাকার পুত্রের কাছ থেকে মিছিল মিটিংয়ে লোক নিতে হয়। আওয়ামীলীগের স্বার্থে রাজাকার ব্যবহার হলে এখন রাজাকার পুত্রের পক্ষে গেলে কেন বিরোধ করা হবে। এ ব্যাপারে কাউন্সিলর সিরাজ বলেন, আমি একজন পোরখাওয়া আওয়ামীলীগার। দলের জন্য সেনাবাহিনীর নির্যাতন সহ্য করেছি। আর সেদিনের ছেলে সালাম ভাগ্যগুনে চেয়ারম্যান হয়ে আমার বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাই আমি সোসাল মিয়ায় আমার বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। সোসাল মিডিয়ার বক্তবই আমার বক্তব্য। এদিকে বন্দরের অন্যতম কুখ্যাত রাজাকার রফিকের পুত্র মাকসুদ হোসেনের নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বন্দরের কতিপয় আওয়ামীলীগ নামধারী অনুপ্রবেশকারী নেতাদের নিয়ে। আসন্ন বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রচারণা করতে দেখা গেছে কুখ্যাত রাজাকার রফিকের ছেলে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে। তার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে মদনপুর ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের বহিঃস্কৃত সভাপতি ও আওয়ামীলীগে অনুপ্রবেশকারী নেতা ও অবৈধ মা হাসপাতাল পরিচালনাকারী শেখ রুহুল আমিন, মদনপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের বহিষ্কার হওয়া সভাপতি ফারুক আহম্মেদ ও তার বোন জামাই অবৈধ তিতাস গ্যাস সরবরাহ কারী দালাল ও বিএনপি নেতা কাওসার, ২৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম সহ একটি মহল। ফারুক আহম্মেদ মদনপুর বাস স্ট্যান্ডে অবৈধ দোকান ও ফুটপাত বসিয়ে দলের নাম ভাঙ্গাগিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। মদনপুরের স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, মদনপুর চৌরাস্তায় মহাসড়কে হকার বসিয়ে প্রতিনিয়ত চাঁদা আদায় করছে আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক আহম্মেদ।মদনপুরের মাদক সম্রাজ্ঞী মাফিয়া আক্তার তানিয়াকে দিয়ে ফ্লাটে দেহ ও মাদক ব্যবসায়ও জড়িত এই আওয়ামীলীগ নেতা। তাছাড়া ধামগড় ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান জেলা পরিষদের সদস্য মাসুম আহম্মেদের স্ত্রী ও মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজাকার পুত্রের স্ত্রী নার্গিস মাকসুদের সাথেও সক্ষতা রয়েছে ফারুক আহম্মেদের। শ্রমীকলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে মদনপুরে মা হাসপাতাল নামে একটি অবৈধ হাসপাতাল চালাচ্ছে শেখ রুহুল আমিন।ইতিপূর্বে শেই হাসপাতালে ভুয়া ডাক্তার গ্রেফতার সহ প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তারপরও অদৃশ্য কারণে জেলার সিভিল সার্জন মদনপুরের এই অবৈধ মা হাসপাতালে কোন অভিযান পরিচালনা করছে না বলে জানান এলাকাবাসী। ২৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম রাজাকার পুত্রের পক্ষে গিয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী এমএ সালামের বিপক্ষে কুরুচিপুর্ণ বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। বন্দরের তৃণমূলের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, অনতি বিলম্বে রাজাকারের পক্ষে যেসব আওয়ামীলীগের নেতারা নির্বাচনী প্রচারণা করছে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হোক। তারা আওয়ামীলীগের দলে থাকার কোন যোগ্যতা রাখে না।জেলা উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের কাছে আমাদের অনুরোধ এসব রাজাকারের উত্তরসূরীদের যেকোন মূল্যে প্রতিহত করতে হবে। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শ্রমীকলীগের নেতা শেখ রুহুল আমিনকে তার মোবাইলে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। বন্দরের মুক্তিযোদ্ধা ও একাধিক আওয়ামীলীগ নেতারা জানান, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতার পর ভোল পাল্টায় রাজাকার রফিক। কিছুদিন আত্মগোপনের পর আবার ফিরে আসে এলাকায়, আবির্ভূত হয় স্বরূপে। গড়ে তোলে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। ছলে বলে কৌশলে নির্বাচিত হয় ইউপি চেয়ারম্যান। আবার অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে এই কুখ্যাত রাজাকার। কয়েক বছর আগে রাজাকার রফিকের সন্ত্রাসীরা কুড়িপাড়া বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনকে। আলাউদ্দিনের অপরাধ, তিনি রফিকের ছেলেকে বলেছিলেন- ‘রাজাকারের ছেলে’। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে বন্দরে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বন্দর কমান্ড মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, মিছিল-মিটিং পর্যন্ত হলেও। আইনের ফাকফোর দিয়ে বেরিয়ে আসে রাজাকার রফিক ও তার সন্ত্রাসীরা। রাজাকার পুত্রের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়া শেখ রুহুল আমিন ও ফারুক আহম্মেদের বিরুদ্ধে কেনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা না জানতে চাইলে বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সধারণ সম্পাক কাজিম উদ্দিন প্রধান বলেন, রাজকার পুত্রের পাশে আওয়ামীলীগের যারাই থাকবে তাদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন”আওয়ামীলীগের কোন পদে থেকে কোন ভাবেই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে গিয়ে রাজাকারের ছেলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় কেউ অংশ নিতে পারবে না।যারা এমন নেক্কারজনক কাজ করছে আমি তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলবো। বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকারের আমলে কুখ্যাত রাজাকারের সন্তানরা কিভাবে রাজত্ব করে এটা আমারও প্রশ্ন। বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ রশীদ বলেন” যারা আওয়ামীলীগের পদ ব্যবহার করে রাজাকার পুত্রের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা করছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ভাবে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




Your email address will not be published.

Comments are closed.


আজকের পত্রিকা
আজকের পত্রিকা
ফেসবুকে আমরা
পুরনো সংখ্যা
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১
Copyright © Dundeebarta 2024
ডান্ডিবার্তা