নির্বাচন নিয়ে অস্বস্তিতে তৃনমূল
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট এবার নারায়ণগঞ্জে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে আওয়ামীলীগের মধ্যে দেখা দিয়ে চরম বিরোধ। আওয়ামীলীগের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা পোষন করে মাঠে রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করলেও এ পর্যন্ত কাউকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়নি। অবশ্য আওয়ামীলীগ এবার দলীয় মনোনয়ন দিবে না বলে ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছেন। তারপরও দলীয় ভাবে কাউকে আশ^স্থ না করায় সকলেই এখনো সম্ভাব্য প্রার্থী। আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতারা চাচ্ছেন আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী করে বিজয়ী করে আনার। কিন্তু বিপত্তি রয়েছে দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী। যদি কাউকে দলীয় ভাবে সমর্থন দেয়া হয় তবে আওয়ামীলীগের মধ্যে দেখা দিতে পারে মনোমালিন্য আর এতে করে আওয়ামীলীগ আগের চেয়ে আরো দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা। এবার এমন চেষ্টাও চলছে যাতে বিনা ভোটে বিজয়ী করে আনা যায় দলের প্রার্থীকে। মাঠ পর্যায়ে একাধির ভোটারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার যে অনাগ্রহ রয়েছে তা উপজেলা নির্বাচনেও প্রভাব ফেলতে পারে। কারন নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি উপ নির্বাচনেও এ চিত্র দেখা গেছে। আওয়ামীলীগ যদি উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে তবে সাধারণ মানুষ আওয়ামীলীগের উপরে থেকে আরো আস্থা হারিয়ে ফেলবে। এছাড়া বিএনপি ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য ভোটারদের নানা ভাবে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবার আওয়ামীলীগ যদি উপজেলা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে তবে আওয়ামীলীগের জন্য হতে আত্মঘাতি। সম্প্রতি বন্দরে এক সমাবেশে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের এমপি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এনিয়ে সর্বত্র চলছে সমালোচনা। আর এ ঘোষনার পর আওয়ামীলীগের মধ্যে দেখা দিয়েছে কোন্দল। যা হয়তো আগামীতে সংঘাতে রূপ নিতে পারে। ইতিমধ্যে এমপির ঘোষণাকে প্রত্যাখান করেছে সম্ভাব্য প্রার্থীরা। তারা মাঠে থাকার ঘোষনা দিয়েছেন। আর এতে করে আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির মধ্যে অন্তদ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। কেহ কাফনের কাপড় পড়ে রাস্তায় নেমেছে আবার কেহ পেশী শক্তি দেখাতে হোন্ডা মহড়া দিচ্ছে সব মিলিয়ে উপজেরা নির্বাচন দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের আগেই প্রার্থীরা আচরনবিধি লঙ্ঘণ করে চলছেন। এছাড়া সদর উপজেলায় আওয়ামলীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় বিপাকে পড়েছে শীর্ষ নেতারা। কাউকে একক সমর্থন দিতে পারছেন না। যা নিয়ে চলেছে দলীয় অন্তদ্বন্দ্ব। এ ব্যপারে একাধিক ভোটার বলেন, এবার বিনা ভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার দিন শেষ। নির্বাচন করেই চেয়ারে আসতে হবে। ভোটারদের পছন্দের প্রার্থীই বিজয়ী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হবেন। রূপগঞ্জে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন শাহজাহান। সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হতে না পেরে তিনি আবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। তবে তিনি কতটুকু সুবিধা করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। সোনারগাঁয়ে চেয়ারম্যন পদে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। চেষ্টা করেও আওয়ামীলীগের একক প্রার্থী করা যায়নি। আড়াইহাজারেও একই অবস্থা। তবে সবচেয়ে বেশী বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে সদর ও বন্দর উপজেলার প্রার্থী নিয়ে। এদিকে উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যরা প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি এক মতবিনিময় সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি সংসদ সদস্য, আমি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করবো, আমার একজন থাকবে তাকে জেতানোর জন্য গোটা প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করবো, এটা হতে পারবে না। যে উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যটা কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত করা যাবে না।’ মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা দেখতে চাই এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কতটা প্রতিযোগিতামূলক, প্রতিদ্বন্ধিতামূলক হয়। নির্বাচনে যারা প্রার্থী হতে চায় হবে। আমরা একটা প্রভাবমুক্ত ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার নির্বাচন করতে চাই।’ বাংলাদেশের নির্বাচনী আচরণ বিধি অনুযায়ী স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কোনো সাংসদ বা মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ভোট চাইতে পারবেন না। এটা আচরণবিধির স্পষ্ট লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে জানা যায়। এ ধরণের অভিযোগে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় সতর্ক করতে বা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়। এবারও দি কোন এমপি কোন প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে তবে দলীয় ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।