ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট

নির্বাচন বর্জন, আন্দোলন-কর্মসূচিতে টানা ব্যর্থতার কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা, বিরক্তি ও অনীহা। এমন পরিস্থিতিতে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে দলটি। এজন্য বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তহীনতা ও ভুল কৌশলকে দায়ী করছেন নেতাকর্মীরা। এঅবস্থায় বিএনপির মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা দলটির সিনিয়র নেতাদের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন না। সূত্রমতে, নির্বাচনের পূর্ব মুহুর্তে দ্বাদশ নির্বাচন বর্জনসহ একদফা আন্দোলন চালিয়ে আসছিল বিএনপি। জনগনকে নির্বাচনকে অংশগ্রহন না করার জন্য একের পর এক কর্মসূচী চালিয়ে আসলেও মূলত এ আন্দোলনের কোন প্রভাব পড়েনি সাধারন মানুষের মাঝে। এমনকি ঢাকার পাশ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতেও

বিএনপির আন্দোলনের কোন প্রভাব পড়েনি। উল্টোদিকে সকল ধরনের ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হয়েছে এমনকি পূনরায় ক্ষমতায় বহাল রয়েছে আওয়ামীলীগ। তবে, এবার নতুন মাত্রায় আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। তাদের অন্যতম শরীকদল জামায়াতকে সাথে নিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের রাজপথে নতুন আঙ্গিকে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি এমনটাই জানা গেছে জেলা বিএনপির সূত্রে। সূত্রমতে, নির্বাচনের পূর্ববর্তী মুহুর্তে কেন্দ্রীয় নির্দেশনায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপি যে অসহযোগ আন্দোলন পালন করেছেন তাতে কতটা সফল হয়েছে তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা বিএনপি অবশ্য বলছে, তাদের এই আন্দোলনে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা মাফিক পালন করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির এই আন্দোলনকে পাত্তা দেয়নি। একই সাথে জনগণও বিএনপিকে ত্যাগ করেছে বলে আওয়ামী লীগের দাবি করছে। জেলা বিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে যাতে এই আন্দোলন নামসর্বস্ব হয়ে না পড়ে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ হাইবলেন, জনজীবন ও অফিস-আদালত এবং মানুষের কর্মজীবন স্বাভাবিক রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, “এখানে কোথায় তারা (বিএনপি) জনগণের সমর্থন পেলো? কোন জনগণের সমর্থন তারা পেয়েছে?” এদিকে অপর এক বক্তব্যে গিয়াসউদ্দিন বলেছিলেন, শেখ হাসিনার বর্তমান পাতানো সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। একই সাথে বিএনপির যেসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদেরকেও আদালতে হাজিরা না দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। “অবৈধ সরকারকে অসহযোগিতার বিকল্প নেই। জেলা বিএনপির সভাপতি গিসাস উদ্দিন সমমনা দলগুলোর গত ২৮ অক্টোবর সমাবেশের পর থেকে দুই-এক দিনের বিরতিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনায় টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি পালন করে আসতে দেখা গেছে। তারা বর্তমানে ড্যামি নির্বাচন বাতিলসহ সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিও জানিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা দলটির কর্মসূচিতে বর্তমানে অনেকটাই ঢিলেঢালা ভাব চলে এসেছে। বিশেষ করে নির্বাচনের পূববর্তী মুহুর্ত থেকো চলে আসা ঢাকার পাশ্ববর্তী গুরুত্বপূর্ণ

জেলা হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জে হরতাল-অবরোধের প্রভাব কমে

আসতে থাকে। অপরদিকে বিএনপির আন্দোলনের নামে অগ্নি

সন্ত্রাস করে আসছে বিএনপিসহ তাদের নেতৃবৃন্দ এমনটাই

অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ। দলীয় নেতৃবৃন্দর সাথে

কথা বললে তারা জানান, বিএনপি যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে তার

প্রতি আসলে দেশের জনগণের কোন সমর্থন নেই। বরং তারা ওই দলটির

আন্দোলনের নামে করা নানা ধরনের কর্মকান্ডকে প্রত্যাখ্যান করেছে

বলেই আওয়ামী লীগের দাবি। বিএনপির নতুন ঘোষিত আন্দোলন

কর্মসূচিকে আওয়ামী লীগ কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এমন প্রশ্নের

উত্তরে দলটির সাধারন সম্পাদক আবু হাসনাত বাদল বলেন, বিএনপি

কি এখন কোনো রাজনৈতিক দল? তিনি বলেন, “তারা তো

রাজনৈতিক দল থেকে আস্তে আস্তে সন্ত্রাসী দলে পরিণত হয়ে গেছে।

এই সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড নিয়ে রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের

তো ভাবনার কিছু নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য যেসব

রাজনৈতিক দল আছে তাদের সম্পর্কে আওয়ামী লীগ চিন্তাভাবনা

করতে পারে। কিন্তু বিএনপিকে নিয়ে ভাবার কিছু নেই। তাদেরকে

নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভাববে। দেশে সন্ত্রাস করে কেউ

যাতে জনজীবন বিপর্যস্ত করতে না পারে সেই জন্য তারা পদক্ষেপ নেবে।

এটা তো আওয়ামী লীগের কোনও বিষয় নয়। তিনি বলেন, বিএনপি

আন্দোলনের নামে যেসব কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে তাতে জনগণেরঅংশগ্রহণ নেই। জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে। “বিএনপির

সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে যে তারা(জনগণ) প্রত্যাখ্যান করেছে তা

নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রমান করে দিয়েছেন।