ভোট কেন্দ্রে পেশীশক্তির শঙ্কা
ডান্ডিবার্তা রিপোর্ট
রাত পোহালেই বন্দর উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতীহীন ভাবে বন্দরের ৫টি উইনয়নের ৫৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে। গতকাল সোমাবর রাতে শেষ হয়েছে প্রাথর্িীদের প্রচার প্রচারনা। এখন শুধু বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রার্থীদের এজেন্ট নিয়োগের কাজ করছেন। মদনপুর, ধামগড়, মুছাপুর, বন্দর ও কলাগাছিয়া ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে বন্দর উপজেলা পরিষদ গঠিত। মোট ৫৪টি ভোট কেন্দ্রে। মোট ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৩১ হাজার ৫৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৭ হাজার ৫০০, নারী ভোটার ৬৪ হাজার ৬২জন। ইতিমধ্যে পুলিশ বন্দরে ৩৫টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ন বলে ঘোষণা করেছে। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিন হেভিওয়েট প্রার্থী। তারা হলেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ(দোয়াত কলম), নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক (বহিস্কৃত) দুই বারের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল (চিংড়িমাছ) ও মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি মাকসুদ হোসেন(আনারস) এছাড়া মাকসুদ হোসেনের ছেলে শুভ ড্যামি প্রার্থী হিসাবে (উড়োজাহাজ) প্রতীবক নিয়ে পিতাকে সহযোগিতা করতে মাঠে রয়েচেন। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রাথী অংশ গ্রহন করছেন এরা হলেন জেলা জাতীয় পার্টি সভাপতি সানাউল্ল্যাহ সানু (উড়োজাহাজ) মুকিত (তালা) আলমগীর হোসেন (মাইক) ও এসআই জুয়েল ( টিউবওয়েল)। একই সাথে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২ প্রার্থী অংশ গ্রহন করছে এরা হলেন এডঃ মাহামুদা (কলস) ও সালিমা হোসেন শান্তা (ফুটবল)। এ ব্যপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাকসুদ হোসেন বলেন, ভোট কেন্দ্রে পেশি শক্তি ব্যবহার হতে পারে। আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। ভোট নাকি কেন্দ্রে গননা না করে জেলা কার্যালয়ে নেয় হবে এমন গুজবও রটাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী। তিনি আরো বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী আমার বিরোধীতা করে বলেন আমি নাকি কালো টাকা ছিটাচ্ছি। প্রকৃত পক্ষে আমরা পূর্ব পুরুষ থেকেই সম্পদশালী। আর আমি নিজে ঘাম জড়িয়ে টাকা কামিয়েছি। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী যিনি বিনাভোটে চেয়ারম্যান হওয়ার আগে তাকে দোকানিরা সিগারেট দিতেন না। তার কারণ তিনি চা, সিগারেট পান করে টাকা দিতেন না। তার কাছে টাকা ছিল না। তিনি রিকশা ভাড়াও দিতে পারতেন না। আর তিনি বিনাভোটে চেয়ারম্যান হয়ে রাতারাতি এতটাকা কোথায় পেল এর জবাব তিনি জনগণের কাছে যেন দেন। আমার কারণে মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরে এসেছে। আমি জয়ের জন্য শতভাগ আশাবাদি। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী এম এ রশিদ তার নির্বাচনী প্রচারনায় বলেন, আমার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট। ছাত্রলীগ কেন্দ্র দখল করে নিবে। যারাই ভোটের মাঠে আছে তারা সামনেও দাঁড়াতে পারবেনা। আমি নির্বাচিত হব। আরেক প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুল বলেন, আমি ২বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম জনগণ জানে আমি কেমন মানুষ। কতটুকু উন্নয়ন করেছি। মানুষ চায় ভাল মানুষ আসুক। ভোটাররা আমাকে ভাল মানুষ হিসাবে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। এ ব্যপারে নাসিক ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম বলেন, এম এ রশিদ ভোটের মাঠে ফাঁকা। তার ভোট নেই। তিনি ক্যাডার বাহিনী দিয়ে ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা করাতে পারে। এবারের নির্বাচনে মাকসুদ হোসেন ও আতাউর রহমান মুকুলের সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। তার সাথে ভোটাররা নেই। তিনি প্রচারনা করেন নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে নেতাদের তোষামত করে এনে। ভোটের মাঠে তিনি জিরো। তিনি যতই হাক ডাক দেন কোন কাজ হবে না। কারণ এর আগেও তিনি ২বার প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে চরম ভাবে হেরেছেন। অবশেষে গতবার এমপিদের দয়ায় বিনাভোটে উপজেলার চেয়ারম্যান হয়ে নিজের আখের গুছিয়েছে। তার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করলে অনেক দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে। তিনি উপজেলাতো দুরের কথা ইউনিয়নের মেম্বার পদেও ভোট পাবে না। কারণ তিনি আওয়ামীলীগের বড় পদ দখল করে রাখলেও কোন কর্মী তৈরী করতে পারেনি। বরং বন্দর আওয়ামীলীগকে ধ্বংস করেছে। তারমত লোককে বর্জন করার আহবান জানাই। তবে বন্দরের বিভিন্ন পর্যায়ের সচেতন নাগরিকরা বলেছেন, নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে ফলাফল পাল্টে দেয়ার সুযোগ বন্দরে না হওয়ার সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে সা¤প্রতিক সময়ে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যে। সুষ্ঠ শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট হলে লড়াইটা শেষ পর্যন্ত ত্রি-মুখীই হবে। কারণ নির্বাচনের মাঠে তিন প্রার্থীর ভোটের নানা অংক কষছেন ভোটাররা। সবমিলিয়ে ৮ মে শেষ হাসি কে হাসবেন তা দেখার অপেক্ষায় বন্দরবাসী। এদিকে এ নির্বাচনে ব্যালটে ভোটগ্রহণ করা হবে এবং স্বচ্ছতার জন্য ব্যালট পেপার সকালে কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে কোনো প্রকার সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা হয়নি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই এ নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবো বলে আশা করছি।’ রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল রাতের মধ্যেই বন্দর উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে ঘোষণা করা হবে। পরবর্তীতে ৯মে সকালে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।